লকডাউনে কাজ হারানো হকারদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্যের বিশেষ উদ্যোগ

শুক্লা রায়চৌধুরী, কলকাতা: লকডাউনে কাজ হারিয়েছে বহু মানুষ। এই প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে হকারদের। তাঁদের দূরাবস্থা দূর করতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সরকারের খাতায় হকারদের নাম নথিভুক্ত করে তাঁদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য।

মূলত কলকাতা পুরসভা এলাকার হকারদের জন্য এই উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে এই উদ্যোগের সূত্রপাত হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। ২০১৫ সালে দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে একটি অনুষ্ঠানে হকারদের নাম নথিভূক্ত করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। শহরের সব হকারদের নাম নথিভূক্ত করে তাঁদের জন্য আর্থিক বা অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সেই নির্দেশ অনুসারে শুরু হয়েছিল কলকাতা পুরসভা এলাকার হকারদের নাম নথিভূক্তকরণের প্রক্রিয়া। পুরসভার সকল ব্যরো এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৫৯ হাজার হকারের নাম নথিভূক্ত হয়েছিল। যদিও তারপরে বিষয়টি আর এগোয়নি। অন্যান্য নানাবিধ ঘটনার জেরে আড়ালে চলে গিয়েছিল।

বর্তমানে করোনা মোকাবিলার জন্য জারি করা হয়েছে লকডাউন। আর এই লকডাউনের জন্য উপার্জন হারিয়েছেন হকারেরা। আন-লক পর্ব চালু হলেও মানুষজন বাইরে যাচ্ছেন না। সেই কারণে হকারদের কারবার বন্ধই রয়ে গিয়েছে। এই প্রতিকূল অবস্থায় কলকাতার এলাকার হকারদের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করে পুরসভা।

সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সেই নথিভূক্ত করা হকারদের নামের তালিকা খুঁজে বের করা হয়। সেখান থেকে বাছাই করা হয়েছে অনেক হকারদের নাম। কলকাতা পুলিশ এবং পুরসভার আধিকারিকেরা যৌথ উদ্যোগে সেই ৫৯ হাজার জন হকারের সেই তালিকা থেকে প্রায় ৩২ হাজার জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। সূত্রের খবর, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সেই চূড়ান্ত তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্নে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এই হকারদের সুরাহার ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হবে।

বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন হকারদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যেতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একাধিকবার হকারদের হয়ে আন্দোলন করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ট্রেনের হকারদের জন্য কম খরচে মাসিক টিকিটের ব্যবস্থা করেছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সেই হকারদের জন্য নয়া উদ্যোগ নিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Google news