অসমে মঠ-মন্দিরের ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে গো-মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ

শুভঙ্কর রায়, গৌহাটিঃ  মঠ-মন্দির চত্বর থেকে পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে গো-মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করলো অসম রাজ্য সরকার। বিরোধীদের প্রবল বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও শুক্রবার ধ্বনি ভোটে রাজ্যটির বিধানসভায় এই সম্পর্কিত একটি বিল পাস করা হয়, যার নাম “অসম ক্যাটেল প্রিজারভেশন বিল 2021″।

শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনে গো সংরক্ষণ বিল নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরে কংগ্রেস ও ইউ.ডি.এফ দলের বিধায়করা। তাদের বক্তব্য এই বিল পাস হলে অসমের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাদের আরও অভিমত গোপালক ও কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই বিল তৈরি করা হয়েছে। এই বিল পাস হলে পশু পালনের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

বিলের বিরোধিতা করে বিরোধীরা একসময় ওয়াকআউট করে। এই বিলটি আলোচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর পরামর্শ দেয় বিরোধীরা।

অসমের কংগ্রেস বিধায়ক রাকিবুল হোসেন বলেন “গরু পাচার বন্ধ হোক এটা আমিও চাই। অসমের গরু বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে এটা বন্ধ করতে সরকার যে উদ্যোগ নেবে তাতে আমি সমর্থন জানাবো। কিন্তু মন্দির বা সংখ্যাগুরু অধ্যুষিত এলাকা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা অযৌক্তিক এবং এতে সামাজিক বিভেদ বাড়বে।”

এ ব্যাপারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার অভিমত “গবাদি পশু ব্যাবহার ও পরিবহন বন্ধের কোন উদ্দেশ্য আমাদের নেই বরং এর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় হবে। তিনি আরও বলেন, এই বিলের কারণে গরুর মাংস খাওয়াতে কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না বরং যিনি গরুর মাংস খান তিনি অন্যের ধর্মীয় ভাবাবেগকে সম্মান জানাবেন।”
শুক্রবার বিধানসভায় এই প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হিমন্ত বিশ্ব বলেন, “এই বিল পাসে আমাদের কোন অসৎ উদ্দেশ্য নেই এবং প্রকৃত মুসলিম ধর্মালম্বী মানুষেরা এর বিরোধীতা করবেন না। এই বিলে কোথাও গোমাংস খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি, কেবল বলা হয়েছে যারা গোমাংস খাবেন তারা যেন মন্দির এবং সত্র থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে খান।”

এরপর তিনি বলেন, “পরিসংখ্যান বলে গত কয়েক বছর ধরে নিম্ন আসামে গরুর মাংস কেন্দ্র করেই একাধিক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই বিল অনুযায়ী রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাড়বে, কারণ যারা গোমাংস ভক্ষণ করে তারা কিছুটা বিধিনিষেধের মধ্যে করবেন তাছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ সহ যেসব সম্প্রদায় গরুর মাংস ভক্ষণ করে না, তাদের ভাবাবেগকে সম্মান জানাবে।”

 

 

Google news