কোপা আমেরিকার আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে কড়া বার্তাই দিয়ে রাখলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। একাদশে ফেরার ম্যাচে গুয়াতেমালার বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য মেসি পেয়েছেন জোড়া গোল। লাওতারো মার্তিনেজকে পেনাল্টি শট নেওয়ার সুযোগ করে না দিলে পেতে পারতেন হ্যাটট্রিকও। পাশাপাশি মার্তিনেজের অন্য এক গোলেও সহায়তা ছিল ইন্টার মায়ামি তারকার। সব মিলিয়ে ওয়াশিংটনে কোপা আমেরিকার শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয় ৪-১ গোলে। মেসির পাশাপাশি জোড়া গোল করেছেন মার্তিনেজও।
লিওনেল মেসির একাদশে ফেরার খবরটা পাওয়া গিয়েছিল ম্যাচের আগেই। কোপা আমেরিকার আগে দলের সমন্বয় বাজিয়ে দেখতেই হয়তো প্রথম মিনিট থেকে মেসিকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন কোচ লিওনেল স্কালোনিও। বড় জয়ে যার সুফলও পেয়েছেন আর্জেন্টাইন কোচ।
মেসির প্রথম একাদশে ফেরার ম্যাচে শুরু থেকেই পজেশন ধরে রেখে আক্রমণকে পাখির চোখ করে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে গুয়াতেমালা চেষ্টা করে রক্ষণ সুদৃঢ় রেখে প্রতি-আক্রমণে যাওয়ার। এ লক্ষ্যে শুরু থেকেই সফল ছিল তারা। যার ফলও তারা পায় ম্যাচের ৪ মিনিটে। ফ্রি-কিক থেকে গুয়াতেমালার প্রথম চেষ্টা এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়ান লিসান্দ্রো মার্তিনেজ।
পিছিয়ে পড়ে মরিয়া হয়ে আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। তবে ৮০ শতাংশের কাছাকাছি সময় বলের দখল রাখলেও সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। জমাট রক্ষণ ও জায়গা সংকুচিত করে রেখে আর্জেন্টিনাকে তেমন কোনো সুযোগ দেননি গুয়াতেমালার ডিফেন্ডাররা। পাশাপাশি প্রতি-আক্রমণ থেকে হুটহাট হুমকিও তৈরি করছিলেন তাঁরা।
তবে ১২ মিনিটে নিজেদের ভুলেই আর্জেন্টিনাকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেয় গুয়াতেমালা। বল পাস দিতে গিয়ে বক্সের ভেতর মেসির পায়ে বল তুলে দেন দলটির গোলরক্ষক। এ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন মহাতারকা। দারুণ ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়িয়ে আর্জেন্টিনাকে ম্যাচে ফেরান তিনি। ভুল করে গোল হজম করার বিষয়টি বাদ দিলে আর্জেন্টিনাকে বেশ ভালোভাবেই আটকে রেখেছিল গুয়াতেমালা। বরং এর মধ্যে পাল্টা আক্রমণ থেকে একাধিকবার গোলের কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিল তারা; যদিও শেষ পর্যন্ত পাওয়া হয়নি গোল। ৩৫ মিনিটের পর নিজেদের সেরা ছন্দ খুঁজে পায় আর্জেন্টিনা। বলের দখল নিজেদের পায়ে রেখে গুয়াতেমালাকে ক্রমাগত কোণঠাসা করে দেয় লাতিন পরাশক্তিরা। যার ফলও আসে ৩৯ মিনিটে।
বক্সের ভেতর ভ্যালেন্টিন কার্বোনি ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। তবে পেনাল্টি শটটি নিজে না নিয়ে লাওতারো মার্তিনেজকে সুযোগ করে দেন মেসি। লক্ষ্যভেদ করে আর্জেন্টিনাকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার। এই লিড নিয়ে বিরতিতে যায় কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
প্রথমার্ধ যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে আর্জেন্টিনা। এ সময় ম্যাচের ওপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তারা। আর্জেন্টিনার দাপুটে ফুটবলের কারণে বলের কাছে আসতেও কষ্ট করতে হচ্ছিল গুয়াতেমালাকে। আকস্মিকভাবে দু–একবার প্রতি-আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত প্রেসিংয়ে নিষ্ক্রিয় পড়ছিল সেসব আক্রমণ।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনা আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও কাঙ্ক্ষিত গোলটি পাওয়া হচ্ছিল না তাদেরও। শেষ পর্যন্ত মেসি-মার্তিনেজ জুটির সমন্বয় থেকে আসে আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে মেসির সহায়তা থেকে গোল করেন মার্তিনেজ।
৭৭ মিনিটে আবার মেসি–জাদু। দারুণ এক আক্রমণে আনহেল দি মারিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে ট্রেডমার্ক চিপ শটে বল জালে জড়ান মেসি। ৪-১ গোলের এ ব্যবধান নিয়েই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ করে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনা নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ২১ জুন কানাডার বিরুদ্ধে।