বৃহস্পতিবার থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ লোকাল ট্রেন, গণ-পরিবহণ ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত মমতার?

খবরএইসময়,নিউজ ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে লোকাল ট্রেন কার্যত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণের মাধ্যম। সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করেন । প্রত্যেকদিন রাজ্যের এক জেলা থেকে অন্য জেলা বা কলকাতায় যাতায়াত করেন কয়েক লক্ষ মানুষ। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত।  কিন্তু গত কয়েকদিনে যে ছবিটা সামনে আসছিল, তা যথেষ্ট আতঙ্কের। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় যখন রাজ্যে প্রতিনিয়ত গড়ে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন রেহাই পাননি রেলকর্মীরাও।

শিয়ালদা ও হাওড়া উভয় শাখা মিলিয়ে ১৩০০-র বেশি রেলকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই রেলের চালক, গার্ড বা কোনও প্রথম সারির কর্মী, যাদের ছাড়া রেল পরিষেবা কার্যত অচল হয়ে পড়তে পারে। আর এ ভাবে রেলকর্মীরা আক্রান্ত হওয়ায় বাতিল করে দিতে হয় একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন। দুই শাখাতেই রেল পরিষেবায় প্রভাব পড়তে শুরু করে। ট্রেনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ে যাত্রীদের। সম্প্রতি, ক্যানিং শাখায় ভিড়ের চাপে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন এক যুবক।

আর এত ভিড়ে কোভিড বিধি মানা কার্যত দুষ্কর হয়ে ওঠে।ফলে সংক্রমণের গ্রাফও ওপরের দিকে উঠছে।যার জেরে এই অবস্থায় লোকাল ট্রেন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথ নেওয়ার পরই করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একগুচ্ছ নয়া সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। তার মধ্যে ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারি পরিবহণ ও মেট্রো ৫০ শতাংশ:

শুধুমাত্র লোকাল ট্রেন নয়, অন্যান্য সরকারি পরিবহনও কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যে। বাস ও অন্যান্য পরিবহণের সংখ্যা কমানো হচ্ছে ৫০ শতাংশ। মেট্রো রেলও কমানো হচ্ছে ৫০ শতাংশ অর্থাৎ সংখ্যায় অর্ধেক চলবে ট্রেন। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পূর্ব নির্ধারিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২১৬ টি ট্রেনই চালানো হবে। আগামিকাল আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কতগুলি ট্রেন কমানো যায় রাজ্যের নির্দেশিকা অনুযায়ী।

দূরপাল্লার ট্রেন:

শুধুমাত্র লোকাল ট্রেন নয়, দূরপাল্লার ট্রেনের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে দেখা যায় করোনা পরিস্থিতিতে। যাত্রী হচ্ছে না বলে অনেক ট্রেন বাতিল করে দিতে হচ্ছে। তবে এবার দূরপাল্লার ট্রেনএর যাত্রীদের জন্য বিশেষ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন ভিনরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের আরটি পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট আনতে হবে।

বিমান যাত্রী:

বাইরের রাজ্য বা দেশ থেকে বিমানে আসতে গেলে আরটি-পিসিআর টেস্ট করে সেই রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। কলকাতা, অন্ডাল ও বাগডোগরা বিমাবন্দরের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে ৭ মে থেকে।

অনেক ক্ষেত্রে ফেক রিপোর্ট নিয়ে আসছেন অনেকেই, সেটা ধরতে কড়া নজর রাখা হবে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু বিমান নয়, দূর থেকে আসা ট্রেন যাত্রীদেরও রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে।