মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে (Mamata Banerjee) কলেজের আরএমও সহ মোট ১২ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে CID তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।
সাসপেন্ড হওয়া ১২ জনের তালিকায় রয়েছেন ৬ জন সিনিয়র ডাক্তার এবং ৬ জন পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি)। মুখ্যমন্ত্রী জানান, গাফিলতির প্রমাণ মিললে এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। মমতা বলেন, “যারা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে এই মাকে বাঁচানো যেত, তাদের গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। এমনকি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করানো অপরাধ।”
প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় দায়ভার কার্যত চিকিৎসকদের একাংশের ওপর চাপিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এত মেডিক্যাল কলেজ থাকা সত্ত্বেও সঠিক পরিষেবা কেন দেওয়া গেল না? দায়িত্ব পালনে অবহেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই ৪২টি নতুন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি করেছে। ১৪ হাজার ৭৪১টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র হবে। এখন রাজ্যে বেডের সংখ্যা ৯৭ হাজারে পৌঁছেছে।”
তিনি আরও বলেন, “গত কয়েক বছরে ১৪ হাজার নতুন ডাক্তার নিয়োগ করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের আসন সংখ্যা ২৫৪৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৮৪৬৭ হয়েছে। প্যারামেডিক্যাল কর্মীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল ও অপারেশন থিয়েটারগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করেন, অনেক সময় অপারেশন থিয়েটারের গেটের বাইরে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিরোধিতা করা হয়। মমতা বলেন, “যারা সিসি ক্যামেরার বিরোধিতা করবেন, তাঁদের ছুটি নিয়ে রাখা উচিত। রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা কোনও আপস করব না।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, CID টিমের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে এবং তা সন্তোষজনকভাবে তদন্তের সঙ্গে মিলে গেছে। তিনি বলেন, “ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে স্যালাইন রি-টেস্ট করা হবে এবং তদন্তের প্রতিটি স্তর খতিয়ে দেখা হবে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষে আবেদন করেন, “সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।”