আবু আলী, ঢাকা : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলে আগামী ২৬ মার্চ ঢাকা–জলপাইগুড়ি রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। এ ট্রেনের নাম, সময়সূচি, ভাড়া ও অন্যান্য বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে উদ্বোধনের আগেই এসব বিষয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘দেশভাগের আগে ঢাকা–জলপাইগুড়ি রুটে নিয়মিত ট্রেন চলত। এ রুটে পুনরায় ট্রেন চললে ইতিহাস সৃষ্টি হবে। দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। অনির্ধারিত বিষয়গুলো উদ্বোধনের আগেই চূড়ান্ত করা হবে।’
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন একটি আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন উদ্বোধন হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি রেল জংশন পর্যন্ত চালানোর জন্য এ ট্রেন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই রুটে ট্রেন চালু হলে সহজেই বাংলাদেশের নাগরিকরা হিমালয়ে যেতে পারবেন। দার্জিলিং এবং সিকিমে পৌঁছানো তাদের পে অনেক সহজ হবে।
ট্রেনের নাম, সময়সূচি, ভাড়া এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। উভয় দেশের রেল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয় নির্ধারণ করা হবে। খুব শিগগিরই দুই দেশের কর্মকর্তারা এ ল্েয বৈঠকে বসবেন।
এর আগে এই রুটে দুই দেশের মধ্যে কোনো ট্রেন ছিল না। ৫৫ বছর আগে উত্তরবঙ্গে দুই দেশের মধ্যে একটি রেল লাইন ছিল। যা হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুট নামে পরিচিত ছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই লাইনে রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। গত ডিসেম্বরে পুনরায় ওই লাইনে মালগাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। ২৬ মার্চ থেকে সেই লাইনেই চলবে প্যাসেঞ্জার ট্রেন।
এর আগে ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন ট্রেনটিতে ১০টি বগি থাকবে। মাঝে কোনো স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়াবে না। প্রায় ৫১৩ কিলোমিটার রাস্তা একবারে অতিক্রম করবে ট্রেনটি।
প্রসঙ্গত, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে দুটি ট্রেন চলাচল করে। একটি কলকাতা থেকে ঢাকা এবং অন্যটি কলকাতা থেকে খুলনা। কলকাতা-ঢাকা ট্রেনটির নাম মৈত্রী এক্সপ্রেস। কলকাতা-খুলনা ট্রেনটির নাম বন্ধন এক্সপ্রেস। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিন চালু হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে প্রথম যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’। এরপর ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর দ্বিতীয় রেল পরিষেবা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চালু হয়। এবার ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে চালু হচ্ছে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত তৃতীয় যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা।