Nephrocare India: ‘ওয়াক ফর ইওর কিডনি’ স্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তা নিয়ে কলকাতার পথে নামল নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়া

লিয়েন্ডার পেজ থেকে প্রিয়াঙ্কা সরকার চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে (Nephrocare India) পা মেলালেন হাজারো মানুষের সঙ্গে।

নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা: রবিবার ছুটির সকালে সল্টলেকের রাজপথ সাক্ষী থাকল এক অন্যরকম উদ্দীপনার। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠল বিধাননগর। উপলক্ষ— নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়ার চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং সেই সঙ্গে কিডনি স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার। “আপনার কিডনির জন্য হাঁটা” বা ‘ওয়াক ফর ইওর কিডনি’ শীর্ষক এই বর্ণাঢ্য ওয়াকাথনের মধ্য দিয়ে সংস্থার চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপিত হলো এক অভিনব ও অর্থবহ কায়দায়।

এদিন সকাল ৭টা নাগাদ সল্টলেকের এএমআরআই হাসপাতালের কাছে নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়া লিমিটেডের ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয় এই পদযাত্রা। প্রবল উৎসাহের সঙ্গে এতে অংশ নেন প্রায় ১,০০০ মানুষ। শুধু সাধারণ মানুষই নন, এই মহতী উদ্যোগে পা মেলালেন ক্রীড়া, বিনোদন ও প্রশাসনিক জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। জীবনযাত্রাগত রোগ বা লাইফস্টাইল ডিজিজ প্রতিরোধে এবং কিডনি সুস্থ রাখতে যে নিয়মিত দ্রুত হাঁটার কোনো বিকল্প নেই, সেই বার্তাই ছিল এই পদযাত্রার মূল সুর।

অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট বসেছিল বলা চলে। উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় টেনিস আইকন লিয়েন্ডার পেজ, জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার, বিশিষ্ট পর্বতারোহী পিয়ালী বসাক এবং ডিসিবি বিধাননগর অনীশ সরকার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ডাঃ প্রতিম সেনগুপ্ত এবং গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলের ডিরেক্টর আশীষ মিত্তাল-সহ বহু বিশিষ্ট অতিথি। তারকাদের উপস্থিতি সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতনতায় আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করে।

ওয়াকাথন শেষে সল্টলেকের গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলে একটি প্রাতরাশ সভা ও সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তারা বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিশিষ্ট নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ প্রতিম সেনগুপ্ত এই উদ্যোগের মূল দর্শনটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়া কেবল রোগের চিকিৎসাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না, বরং আমরা চাই রোগ যাতে না হয় সেই সচেতনতা গড়ে তুলতে। একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি মনে করি, চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই সর্বদা শ্রেয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “হাঁটা হলো শরীরচর্চার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর মাধ্যম। এটি হৎপিণ্ড ভালো রাখে, কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং শারীরিক ও মানসিক—উভয় স্বাস্থ্যেরই উন্নতি ঘটায়। আজ সকালে লিয়েন্ডার পেজের মতো ব্যক্তিত্বের পাশে হাজারো মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে মানুষ এখন স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন।”

ডাঃ সেনগুপ্ত স্পষ্ট করেন যে, এই ওয়াকাথন কোনো একদিনের লোকদেখানো অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী অভিযানের অংশ। নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়া চায়, মানুষ তাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততার মধ্যেও হাঁটার মতো সাধারণ অভ্যাসগুলো বজায় রাখুক, যা ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

ফিটনেস, সচেতনতা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার এক অনন্য মিশেল হয়ে উঠেছিল এদিনের অনুষ্ঠানটি। হাঁটার মতো ছোট একটি পদক্ষেপও যে সুস্থ ভবিষ্যতের চাবিকাঠি হতে পারে, সেই বার্তাই এদিন জোরালোভাবে উঠে এল সল্টলেকের বুকে।