আরজি করের ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সওয়াল করছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল(Kapil Sibal)। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে চলছে সেই মামলা। সেই মামলার মাঝেই এবার আইনজীবীদেরই ক্ষোভের মুখে পড়লেন সিব্বল। সুপ্রিম কোর্টের ‘বার অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি হিসেবে এবার অনাস্থার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কপিল সিব্বলের। তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
গত ২১ আগস্ট আরজি করের ঘটনা নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন সিব্বল। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের লেটারহেডে সেই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, “আর জি করের ঘটনা অস্থির সময়ের ইঙ্গিত করে। সিবিআই ঘটনার তদন্ত করছে। আশা করি ন্যায়বিচার পাবেন নির্যাতিতা। শাস্তি হবে অভিযুক্তের। দেশে আগামী দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেটা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।” ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “চিকিৎসকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করেছে।”
বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের একাংশের বক্তব্য, আর জি করের ঘটনা নিয়ে কোনও সদস্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই একতরফা একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন সিব্বল। নিজের ব্যক্তিগত মতামত তিনি প্রকাশ করেছেন বার অ্যাসোসিয়েশনের লেটারহেডে। ওই বিবৃতিতে আর জি করের ঘটনাকে ছোট করে দেখানো হয়েছে বলেও দাবি আইনজীবীদের একাংশের। তাছাড়া তিনি একাধারে দোষীদের শাস্তি চাইছেন আবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হয়ে মামলা লড়ছেন, এতে স্বার্থের সংঘাতের তত্ত্বও দেখছেন অনেকে। সব মিলিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে বেশ চাপে সিব্বল।
একদিকে এই মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী হিসেবে লড়ছেন সিব্বল, অন্যদিকে বিবৃতি দিয়ে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন তিনি। এতে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ অর্থাৎ স্বার্থের সংঘাত তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আইনজীবীদের একাংশ। বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিশিষ্ট আইনজীবী ড. আদিশ সি আগরওয়াল চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিবৃতি প্রত্যাহার করতে হবে ও বারের সব সদস্যের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে কপিল সিব্বলকে। অন্যথায় সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে সিব্বলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কপিল সিব্বল কী পদক্ষেপ করেন, আইনজীবী ও রাজনৈতিক মহলের নজর সেদিকেই।