খবর এইসময়, নিউজ ডেস্কঃ এ রাজ্যে একুশের নির্বাচনে তোলপাড় হয়েছিল এক বৃদ্ধাকে মারধর ও পরবর্তী সময়ে তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।যে ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর ২৪ পরগনার নিমতায়। হামলার শিকার হয়েছিলেন যিনি সেই বৃদ্ধার নাম ছিল শোভা মজুমদার। সেই সময় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির জল এতটাই ঘোলা হয়েছিল যে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে। একুশের ফলাফল বেরোনর পর দেখা গেল, প্রয়াত ওই বৃদ্ধার পুরওয়ার্ড, এমনকি তাঁর পাড়ার দু’টি অংশেই জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বিধানসভার ফলপ্রকাশ পাওয়ার পর দেখা যায়, নিমতার ওই পুরওয়ার্ডে তৃণমূল ভোট পেয়েছে ২৭৮৪ টি ভোট, বিজেপি পেয়েছে ২৫৪৬ টি ও সিপিএম ৯৮৪ টি ভোট পেয়েছে। এমনকি, শোভা মজুমদারের বাড়ি যে পাড়ায়, সেই পটনা স্কুল রোডের দু’টো ভাগের একটিতে ৩৭ ও দ্বিতীয়টিতে ১৮ ভোটে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
উত্তর দমদম পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পটনা স্কুল রোডের বাসিন্দা ছিলেন শোভা মজুমদার। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ছেলেতে বাঁচাতে গেলে তাঁকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের একদল কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। প্রাথমিকভাবে ওই বৃদ্ধাকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাবি করতে শোনা যায়, তাঁর ছেলে গোপাল মজুমদার বিজেপি করে। স্থানীয় কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গোপালকে মারধর করলে তাঁকে বাঁচাতে যান শোভা। সেই সময় আক্রান্ত হতে হয় তাঁকে।
তৃণমূলের তরফে যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে তোলা একই ধরনের অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে দেওয়া হয়। পালটা শাসকদল দাবি করে, পারিবারিক অশান্তির ঘটনাকে হাতিয়ার করে নোংরা রাজনীতি করছে বিজেপি। পরবর্তী সময়ে নিমতার ওই পরিবারের বয়ানও পালটে যায়। তবে যেটা থেমে যায়নি তা হল, শোভাদেবীকে নিয়ে রাজনীতি।
দীর্ঘ একমাস লড়াইয়ের পর গত ২৯ মার্চ মারা যান শোভা মজুমদার। তাঁর মৃত্যুর পর শোভাদেবীর ছবি ব্যবহার করে পালটা প্রচার শুরু করে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ শ্লোগানের পালটা দিয়ে শোভা মজুমদারের ছবি ব্যবহার করে পোস্টার ছাপানো হয়। সেখানে লেখা হয়, “ইনি কি বাংলার মেয়ে নন?” দক্ষিণবঙ্গ-সহ উত্তরবঙ্গেও এই ছবি ব্যবহার করে জোর প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের প্রচারেও উঠে এসেছিল শোভাদেবীর প্রসঙ্গ।