রেকর্ড পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন (Outward Remittances) বিদেশে বসবাসরত ভারতীয়রা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়রা “লিবারেলাইজড রেমিটেন্স স্কিম” (এলআরএস)-এর আওতায় ২৯.৪৩ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২% বেশি (২৪.১৮ বিলিয়ন ডলার)। উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি এখন পর্যন্ত এলআরএস-এর আওতায় পাঠানো সবচেয়ে বড় পরিমাণ অর্থ।
বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের রেমিটেন্স (এলআরএস রেমিটেন্স) কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ২০২১ অর্থবছরে এলআরএস রেমিটেন্স হ্রাস পেয়েছিল। তবে ২০২২ অর্থবছরে উন্নতি ঘটে এবং ২০২৩ সালেও এই বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যদিও 2024 সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্রাস পেয়েছিল, তবে পুরো বছরের পরিসংখ্যান ভাল খবরই দিচ্ছে।
আর্থিক বছর ২০২৩-এ এলআরএস-এর আওতায় রেমিট্যান্স ছিল সর্বোচ্চ ২৭.১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের তুলনায় ৬% বেশি। তবে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যান (২.০১ বিলিয়ন ডলার) জানুয়ারির পরিসংখ্যানের (২.৬২ বিলিয়ন ডলার) তুলনায় ২৩% হ্রাস পেয়েছে।
২০২৪ এর এপ্রিল-ফেব্রুয়ারীর মধ্যে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণে ব্যয় ২৭.৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের ১২.৫১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল নিকট আত্মীয়দের কাছে যাওয়া এবং বিদেশে শিক্ষার জন্য পাঠানো অর্থের বৃদ্ধি। আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ৪.২২ বিলিয়ন ডলার এবং বিদেশী শিক্ষার জন্য ৩.২৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছিল। তবে গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছর ৪% কম রেমিটেন্স পাঠানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণ হ্রাসের কারণে এই হ্রাস ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যান দেখলে বিদেশ ভ্রমণে খরচ কিছুটা কমেছে। এলআরএস প্রকল্পের আওতায় মোট ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশি বিদেশ ভ্রমণে হয়ে থাকে, তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অর্থাৎ, এবার ফেব্রুয়ারিতে বিদেশ ভ্রমণে মোট ১.০৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষা, উপহার এবং পারিবারিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাঠানো অর্থও বেড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এই সময় বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪৬.৮২ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে এল.আর.এস প্রকল্প চালু করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় বাসিন্দারা প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২,৫০,০০০ মার্কিন ডলার বিদেশে পাঠাতে পারবেন। বিদেশ ভ্রমণের পাশাপাশি বিদেশে সম্পত্তি কেনা, চিকিৎসা করানোর মতো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।