ভারেতের প্যারালিম্পিকের ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় (Paralympic Hero) হলেন হাই জাম্পার মারিয়াপ্পান থাঙ্গাভেল্লু। ১৯৯৫ সালের ২৮ জুন তামিলনাড়ুর সালেম জেলার পেরিয়াভাদাগামপট্টি গ্রামে এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মারিয়াপ্পান। তার বাবা-মায়ের ছয় সন্তানের (চার ভাই ও এক বোন) অন্যতম ছিলেন তিনি। মারিয়াপ্পান যখন খুবই ছোটো তখনি তার বাবা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেন। মারিয়াপ্পানের মা সরোজা কখনও সব্জি বিক্রি করে কখনও ইটভাটায় কাজ করে ৬ সন্তানের প্রতিপালন করেন।
মারিয়াপ্পানের বয়স যখন ৫ বছর, তখন তার জীবনে নেমে আসে সেই ভয়ঙ্কর দিন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও স্কুলে যাচ্ছিল ছোট্ট মারিয়াপ্পান। হঠাৎ একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার পায়ের ওপর দিয়ে চালিয়ে দেয়। মারিয়াপ্পানের (Paralympic Hero) ডান পায়ের পাতা গুঁড়িয়ে যায়। দারিদ্র্য বা শারীরিক পঙ্গুত্ব, কোনটাই বাঁধা হতে পারেনি মারিয়াপ্পানের এগিয়ে যাওয়ার পথে।
১৪ বছর বয়সে মারিয়াপ্পান (Paralympic Hero) প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ইভেন্টে সক্ষম প্রতিযোগীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। ২০১৩ সালে ভিন্নভাবে সক্ষমদের জন্য স্পোর্টস অ্যাকাডেমি অফ ইন্ডিয়ার কোচ সত্যনারায়ণের নজরে আসেন মারিয়াপ্পান। তিনি জাতীয় প্যারা-অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে মারিয়াপ্পানের পারফরম্যান্স লক্ষ্য করেন এবং ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে ছাত্র হিসাবে গ্রহণ করেন এবং আরও ভাল প্রশিক্ষণের জন্য তাঁকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসেন।
২০১৬ সালে, মারিয়াপ্পান তিউনিসিয়ায় আইপিসি গ্র্যান্ড প্রিক্সে পুরুষদের টি-৪২ হাই জাম্প ইভেন্টে ১.৭৮ মিটার (৫ ফুট ১০ ইঞ্চি) অতিক্রম করে ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিকসের (Paralympic Hero) জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন। রিওতে, তিনি ১.৮৯ মিটার (৬ ফুট ২ ইঞ্চি) লাফ দিয়ে টি-৪২ বিভাগে স্বর্ণপদক জিতে দেশের মুখোজ্জ্বল করেন।
২০২১ সালের আগস্টে, তিনি ২০২০ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিকে পুরুষদের টি৬৩ হাই জাম্প ইভেন্টে রৌপ্য পদক জেতেন, যা তাঁর প্যারালিম্পিক কেরিয়ারের দ্বিতীয় পদক।
এবছর প্যারিসে প্যারালিম্পিকে যোগদানের আগে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন মারিয়াপ্পান। ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানে অনুষ্ঠিত বিশ্ব প্যারা অ্যাথলিট চ্যাম্পিয়নশিপে হাইজাম্পের টি৬৩ বিভাগে সোনা জিতেছেন। তিনি ১.৮৮ মিটার লাফিয়েছেন। আসন্ন প্যারিস প্যারালিম্পিকেও মারিয়াপ্পান হাই জাম্পের টি৬৩ বিভাগেই খেলবেন। এবারও মারয়াপ্পানের কাছ থেকে সোনার পদকের অপেক্ষায় দেশ।