এশিয়ান গেমসে প্যারা তীরন্দাজিতে দুটি স্বর্ণপদক জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করে ভারতের আর্মলেস তীরন্দাজ শীতল দেবীর পরবর্তী লক্ষ্য হল প্যারিস প্যারালিম্পিকে (Paralympic Hero) দেশের জন্য সোনার পদক জিতে আনা। পা দিয়ে তীর ছুঁড়ে পদকজয়ী বিশ্বের প্রথম মহিলা হয়েছেন শীতল। প্যারিস প্যারালিম্পিকে যোগদানকারী অ্যাথলিটদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠা হলেন শীতল।
কিশ্তওয়ারের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা এই অ্যাথলিটকে (Paralympic Hero) ভারতীয় সেনাবাহিনী ছোটবেলায় দত্তক নিয়েছিল। ২০২৩ সালে তিনি প্যারা ওয়ার্ল্ড আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে সিঙ্গাপুরের আলিম নূর এস-কে ১৪৪.১৪২ পয়েন্টে পরাজিত করে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। কাঁধবিহীন মার্কিন তীরন্দাজ ম্যাট স্টুটজম্যানের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন শীতল। স্টুটজম্যান লন্ডন প্যারালিম্পিকে (২০১২) পদক জিতে সমগ্র বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। স্টুটজম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রস্নগে শীতল বলেন, “আমি যখন তীরন্দাজি শুরু করি, তখন কেউ আমাকে স্টুটজম্যানের ভিডিও দেখায়। পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাই। তার সঙ্গে দেখা করে আমি সত্যিই আনন্দিত হয়েছিলাম। তিনি আমাকে উৎসাহ দেন।”
শীতল বলেন, তিনি পদকের চাপ না নিয়ে নিজের সেরাটা দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করছেন। তিনি বলেন, “ম্যাচ কাছাকাছি হলেও আমি কোনো চাপ নিই না। গেমস শুরু হওয়ার পর, আমি জয়, পরাজয় বা পদকের কথা না ভেবে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি।” শীতল এশিয়ান প্যারা গেমসে মহিলাদের ব্যক্তিগত কম্পাউন্ড বিভাগে স্বর্ণ পদক, কম্পাউন্ড মিশ্র বিভাগে একটি স্বর্ণ এবং মহিলাদের দ্বৈত বিভাগে একটি রৌপ্য পদক জিতেছিলেন।
শীতল ‘ফোকোমেলিয়া’ নামে একটি জন্মগত রোগে ভুগছেন। এই রোগে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হতে পারে না। এই রোগের কারনেই দুটি হাত নেই শীতলের। প্যারিস প্যারালিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতার স্বপ্ন পূরণের জন্য শীতল (Paralympic Hero) সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। শীতলের কোচ অভিলাষা বলেন, ‘শীতলের জন্য তীরন্দাজি বেছে নেওয়া খুব কঠিন ছিল। তিনিই একমাত্র মহিলা তীরন্দাজ যিনি তাঁর পা ব্যবহার করেন। আমরা তাকে সাধারণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনুশীলন করাতে পারি, যাতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তিনি অনেক নিয়মিত তীরন্দাজের চেয়ে ভালো করছেন।