প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মা মাধবী রাজে সিন্ধিয়া (Pasess Away Madhavi Raje Scindia)। গত কয়েক দিন ধরে দিল্লির এইমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর দিল্লি থেকে মধ্যপ্রদেশ পর্যন্ত শোকের ঢেউ বইছে। মাধবী রাজের মৃত্যু গোয়ালিয়র রাজপরিবারের জন্য একটি বড় ক্ষতি। সূত্রের খবর, দিল্লির এইমস-এ সকাল ৯:৩০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কিছুদিন ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল তাঁকে।
প্রয়াত হলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মা মাধবী রাজে সিন্ধিয়া। বুধবার সকালে দিল্লির এইমস-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত কয়েক মাস ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। নির্বাচনের সময়, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে বারংবার নির্বাচনী প্রচারের মাঝেই দিল্লি ছুটে যেতে হয়েছে।
সিন্ধিয়া রাজপরিবারের পুত্রবধূ হওয়ার আগে মাধবী রাজের নাম ছিল কিরণ রাজ লক্ষ্মী। তিনি নেপালের রাজপরিবারের কন্যা। ১৯৬৬ সালের ৮ই মে তিনি গোয়ালিয়রের তৎকালীন মহারাজা মাধব রাও সিন্ধিয়াকে বিয়ে করেন। তাঁদের রাজকীয় বিবাহ নিয়ে সে’সময় বেশ চর্চা হয়েছিল। বিয়ে হয়েছিল দিল্লিতে। মাধবরাও বরযাত্রীসহ ট্রেনে করে গোয়ালিয়র থেকে দিল্লি গিয়েছিলেন বিয়ে করতে। বিয়ের পর মাধবী গোয়ালিয়রের জয় বিলাস প্রাসাদে থাকতেন। মাধবী রাজের দুই সন্তান রয়েছে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং চিত্রাঙ্গদা সিং।
মাধবী রাজের জীবনের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি আসে ২০০১ সালে। তাঁর স্বামী মাধবরাও সিন্ধিয়া একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। এই ঘটনা কেবল মাধবী রাজের জীবনে নয়, কংগ্রেস দলের জন্যও বড় ক্ষতি ছিল। মাধবরাও সিন্ধিয়ার মৃত্যুর পর মাধবী তাঁর পুত্র ও পুত্রবধূর সঙ্গে থাকতেন। তাঁর পিতার মৃত্যুর পর, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া পরিবারের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মাধবী রাজে সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২৪টি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন ছিলেন যা শিক্ষা ও চিকিৎসা পরিষেবার মতো ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে থাকে। তিনি তাঁর প্রয়াত স্বামী মাধবরাও সিন্ধিয়ার স্মরণে প্রাসাদে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করিয়েছিলেন।
মাধবী রাজের সঙ্গে তাঁর শাশুড়ি বিজয়া রাজের দীর্ঘ সময় ধরে ভাল সম্পর্কই ছিল। কিন্তু মাধবরাওয়ের সঙ্গে রাজমাতার সম্পর্কের অবনতি হলেও মাধবী রাজের সঙ্গেও তাঁর শাশুড়ির সম্পর্কে অবনতি ঘটে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক রশিদ কিদওয়াইয়ের বই দ্য হাউস অফ সিন্ধিয়ার এ-সাগা অফ পাওয়ার, পলিটিক্স অ্যান্ড ইন্ট্রিগ বিজয়া রাজে এবং মাধবরাওয়ের মধ্যে সম্পর্কের উপর আলোকপাত করে। বইটিতে বলা হয়েছে, বিজয় রাজে মাধবীকে পুত্র মাধবের সঙ্গে দূরত্বের কারণ মনে করতেন। অন্যদিকে মাধবরাও সর্দার আংরেকে মা ও ছেলের মধ্যে দূরত্বের কারণ হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। ১৯৭২ সালে মাধবরাও এবং বিজয় রাজের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে, যখন তিনি তার মায়ের দল জনসংঘ ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।