নিজস্ব প্রতিনিধি,বারাসতঃ মারণ করোনাভাইরাসের আতঙ্ক গোটা বিশ্বজুরে। সমগ্র দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন।তার মধ্যে থেকেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সঙ্খ্যাও।রাজ্য জুড়ে পৃথক জোন ভাগ করেছে প্রশাসন থেকে। কলকাতার পরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ‘রেড জোন’এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফলে আরও বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে লকডাউনে। এর পরেও লকডাউনের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ টাকা চেয়ে হুমকি চিঠি আসল অধ্যাপকের বাড়িতে।হুমকি চিঠি পেয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত অধ্যাপকের পরিবার।ঘটনাটি বারাসত পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের।আজ সকালে বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে।পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,বারাসতের হৃদয়পুরে বাড়ি অধ্যাপক অমিত সিংহ রায়ের।তাঁর স্ত্রী পিয়ালিও অধ্যাপিকা।ওই দম্পত্তির দুই শিশু সন্তান রয়েছে। কর্মসূত্রে দু’জনকেই বেশিরভাগ সময় কোচবিহারে থাকতে হয়।সেখানকার একটি কলেজে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত দম্পতি।লকডাউনের আগে শিশু সন্তান নিয়ে তাঁরা এসেছিলেন হৃদয়পুরের বাড়িতে।লকডাউনের কারনে আর কর্মস্থলে ফেরা সম্ভব হয়নি দম্পতির।আটকে পড়েন বাড়িতেই।এরই মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁদের বাড়িতে কে বা কারা টাইলসের টুকরো ছোড়ে বলে অভিযোগ।প্রথম দিকে সেভাবে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া না হলেও পরে বাড়তে থাকে অদ্ভুত এই ঘটনা।কিন্তু,বাইরে বেরলে কাউকেই দেখতে পাননি দম্পতি।গতকাল বিকালে বাড়ির ছাদে ওঠেন পিয়ালি দেবী।সেখানে টাইলসের অজস্র টুকরো পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।এরপর,ছাদের এক কোনায় লাল সুতোয় বাঁধা একটি কাগজ লক্ষ্য করা যায়।সেটি খুলতেই ওই অধ্যাপিকা দেখেন,তাঁর সন্তানদের প্রাননাশের হুমকি দিয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।টাকা না দিলে তার ফলও ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।এমনকি,দম্পতির গতিবিধির ওপর লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সেই চিঠিতে।চিঠি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তা জানানো হয় তাঁর অধ্যাপক স্বামী সহ পরিবারের লোকেদের।হুমকি চিঠি পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত ওই দম্পতি আজ সকালে দ্বারস্থ হয় পুলিশের।লিখিত অভিযোগ করা হয় বারাসত থানায়।
এবিষয়ে অধ্যাপিকা পিয়ালি সিংহ রায় বলেন,”এই নিয়ে দু’বার হুমকি চিঠি পেলাম।চিঠিতে সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।চিঠিতে প্রথম দফায় ২৫ হাজার টাকা।দ্বিতীয় দফায় ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।টাকা না দিলে আমার সন্তানদের ক্ষতি করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।চিঠি পেয়ে যথেষ্ট আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি আমরা”।সন্দেহের তালিকায় কেউ আছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,”আমি ও আমার স্বামী কর্মসূত্রে কোচবিহারে থাকি।দু’জনেই অধ্যাপক।এখানে যেহেতু সেভাবে থাকা হয়না,তাই কারা এর করেছে জানা নেই আমাদের।তাছাড়া আমাদের সাথে কারোর শত্রুতা নেই।পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে”।
এদিকে,অধ্যাপক দম্পতির অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমেছে বারাসত থানার পুলিশ।তাঁরা জানিয়েছে,”অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।চিঠির সূত্র ধরে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে,ঘটনার পিছনে কাদের হাত রয়েছে।যারাই যুক্ত থাকুক তাদেরকে রেয়াত করা হবেনা।গ্রেপ্তার করা হবে প্রত্যেককে”।