ঠিক দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিট। ‘পবিত্র মুহূর্তে’ খোলা হল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের দরজা। যে ভান্ডারে দ্বাদশ শতকের পুরনো মন্দিরের ‘বিবিধ রতন’ জমা আছে বলে বিশ্বাস। দীর্ঘ আলোচনা এবং বিতর্ক পেরিয়ে সেই ভান্ডার রবিবার খোলা হল ৪৬ বছর পরে। ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের পরামর্শে। রত্নভান্ডারটির সংরক্ষণের কাজের জন্য।
ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হলে পুরীর রত্নভাণ্ডার খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। সেইমতো বিজেপি সরকার গড়ার পর শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও রাজ্য সরকার ও মন্দির কর্তৃপক্ষের তৈরি করে দেওয়া কমিটি বৈঠকে বসে ঠিক করে রথ ও উল্টোরথের মাঝামাঝি সময় যখন ভগবান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি মন্দির থেকে বাইরে বের করে নিয়ে আসা হবে তখনই রত্নভাণ্ডার খোলা হবে। যদিও শেষে তারিখ বদল করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৪ জুলাই দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিটের প্রবিত্র সময়ে খোলা হবে এর দরজা। সেই মত সময় মেপে রত্নভাণ্ডারের দরজা খোলেন কমিটির ১১ জন সদস্য। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে রত্ন ভাণ্ডারের চারপাশ মুড়ে ফেলা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, রত্নভাণ্ডারের মধ্যে জগন্নাথ দেবের বৈদূর্য মণি ও নীলকান্ত মণি এবং নানান অলঙ্কার-সহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিস রয়েছে। পুরীর মন্দির সূত্রে জানা যাচ্ছে, রত্ন ভাণ্ডারের বাইরের চেম্বারটি খোলা হয়েছে। সেই সব সামগ্রী রাখতে আনা হয়েছে বিশেষ বাক্স। প্রাচীন মূল্যবান রত্ন-সহ জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার গয়না ও নানান দামী জিনিস রয়েছে, তা ওই বাক্সে ভরে আপাতত অস্থায়ী স্ট্রং রুমে সরিয়ে রাখা হবে। বহির ভাণ্ডারের মূল্যবান জিনিসগুলো মাঝে মধ্যে খুলে পুজো ও উৎসবের সময় ব্যবহার করা হলেও ভিতর ভাণ্ডার ৪৬ বছর বাদে খোলা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, আগে যা ছিল এখনও তা রয়েছে কিনা তার তালিকা মিলিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। রত্ন যাচাইয়ের জন্য আনা হয়েছে স্বর্ণকারদের।
রত্নভান্ডারে দরজা খোলা এবং তা সংরক্ষণের প্রক্রিয়ার জন্য যে উচ্চস্তরীয় কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, তারাই এ কাজের জন্য একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ তৈরি করে দিয়েছে। যাতে অনুমোদন দিয়েছে ওড়িশার নবগঠিত সরকার। সেই অনুমোদিত প্রক্রিয়া মেনেই হবে রত্নভান্ডার সংক্রান্ত যাবতীয় সংস্কারের কাজ।