সৌভিক সরকার, বারাকপুরঃ মাঝে আর একটা দিন। আগামী সোমবার রাখি পূর্ণিমা। আর এদিন সকাল থেকেই শুরু হয়ে যাবে ভাই এবং বোনদের মধ্যে প্রেম, যত্ন এবং সুরক্ষার সুন্দর এবং দৃঢ়তার বন্ধন পবিত্র রাখিবন্ধন। বিভিন্ন বৈদিক পবিত্র গ্রন্থের মত মহাভারতে উল্লেখ করা আছে এই রাখি বন্ধনের কথা। যেখানে বলা হয়েছে, রাখি বন্ধনের সূত্রপাত কৃষ্ণ আর দ্রৌপদীর হাত ধরে । একবার ধারালো অস্ত্রে আঘাত পেয়েছিলেন কৃষ্ণ । দ্রৌপদী তখন তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে কৃষ্ণের আঙুলে পট্টি বেঁধে দিয়েছিলেন । একেই বলা হয় রক্ষা সুতো । পরবর্তীতে যখন হস্তিনাপুরের রাজসভায় পাঞ্চালির বস্ত্রহরণ করতে গিয়েছিল কৌরবরা, তখন একজন বড় দাদার মতোই বোনের সম্মান রক্ষা করেছিলেন মাধব(কৃষ্ণের নাম)। নিজের হাতে বাঁধা দ্রৌপদীর শাড়ির টুকরো খুলেছিলেন কৃষ্ণ । ফলে দ্রৌপদীর শাড়ি কখনও শেষ হয়নি ।এইভাবেই ভাইয়ের হাতে বোনেদের রক্ষা সুতো বেঁধে রাখীবন্ধনের প্রচলন হয়।হিন্দু ও মুসলিম এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা আনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন।
তবে যাঁরা এই রাখি বানানোর কারিগর এবছর তাঁরা পড়েছেন বিপাকে। এই অতিমারি করোনার আবহে লকডাউনের কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাখি ব্যাবসায়ীরা। গতবছরই এইসময় রমরমিয়ে চলেছে রাখির বেচাকেনা। ফলে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখতে পেরেছিলেন, রাখি ব্যাবসায়ী ও কারিগরেরা। তবে এবছরের চিত্রটা বেশ আলাদা৷
ঘন ঘন লকডাউনে জেরেই ব্যাবসা প্রায় লাটে ওঠার মতোন অবস্থা। আর এমনই পরিস্থিতি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের নৈহাটি এবং গারুলিয়ার রাখি ব্যাবসায়ীদের। রাখি তৈরী হলেও দোকান বন্ধ থাকায় বিক্রি নেই তাদের। ফলে ক্রেতার অভাবেই বড়সড় অর্থিক মাসুল দিতে হচ্ছে তাদের। প্রতিবছরই বাংলা থেকে বেশীর ভাগ রাখি বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উড়িষ্যা সহ বেশ কিছু রাজ্যে ট্রান্সর্পোটের মাধ্যমে পৌঁছে যায়। তবে এবছর লকডাউনের মাঝে প্রথম আনলকের সময় স্বল্প সংখ্যক রাখি তারা ভিনরাজ্যে পৌঁছাতে পেরেছে বলে এমনটাই জানালেন সুরেশ সাও নামে এক রাখি ব্যাবসায়ী।