পড়ুয়াদের শিক্ষার পাশাপাশি শারীরিক এবং মানসিক সুরক্ষার দায়িত্ব থাকে স্কুলের। আর সেই স্কুলেরই দশম শ্রেণির ৮০ জন ছাত্রীকে শার্ট (Remove Shirts) খুলতে বাধ্য করলেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ১০ জানুয়ারী ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার জোরাপোখর থানা এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে।
ঘটনার সূত্রপাত হয়,দশম শ্রেণির পরীক্ষা শেষে ছাত্রীদের মধ্যে ‘পেন ডে’ উদযাপন করা কালীন। পরীক্ষা শেষে স্কুল ছেড়ে একে অপরের থেকে দূরে চলে যাওয়ার জন্য মন খারাপ হয়। স্কুলের স্মৃতি ধরে রাখতে ছাত্রীদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের স্কুল শার্টে একে অপরের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বার্তা এবং ভালবাসার কথা লিখেছিল। কিন্তু প্রিন্সিপালের নজরে এলে তিনি আপত্তি জানান এবং ক্ষমা চাওয়া সত্ত্বেও ৮০ জন ছাত্রীকে শার্ট খুলে ফেলার (Remove Shirts) নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। তিনি এটিকে বিশৃঙ্খলা বলে মনে করেন এবং ছাত্রীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ছাত্রীদের বাড়ি ফেরত পাঠানোর সময় তাদের শার্ট ফেরত দেওয়া হয়নি। ছাত্রীদের অনেকেই বাধ্য হয়ে শুধুমাত্র ব্লেজার পরে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যায়। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিভাবকদের দাবি, ছাত্রীদের অপমান করা হয়েছে এবং তাদের ব্লেজারের নীচে শার্ট ছাড়াই (Remove Shirts) বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, যার ফলে তারা ব্যথিত হয়েছে।
অভিভাবকরা বিষয়টি ধানবাদের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মাধবী মিশ্রকে জানিয়েছেন। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে এবং প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়। জেলা প্রশাসন এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে থাকছেন সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা শিক্ষা আধিকারিক, জেলা সমাজ উন্নয়ন আধিকারিক এবং সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার। এই কমিটি বিস্তারিত তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ডিসি মিশ্র। স্থানীয় বিধায়ক রাগিনী সিংও অভিভাবকদের সাথে ছিলেন, ঘটনাটিকে “দুর্ভাগ্যজনক এবং লজ্জাজনক” বলে অভিহিত করে বলেন, “একজন মহিলা হিসেবে, অল্পবয়সী মেয়েদের প্রতি এমন আচরণ দেখে অবাক লাগছে। এই ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”