নিউজ ডেস্ক, খবরএইসময়ঃ গত বছর মার্চ মাসে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় সব রাজ্যেই লকডাউনের জেরে দেশের অর্থনীতি একেবারে বেসামাল হয়ে পরায় দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ চাকরি-হারা হয়েছেন। মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে ফিরতে হয়েছে সেই সময়। এরপর করোনা পরিস্থিতি একটু সামলে উঠতে না উঠতে হাজির দ্বিতীয় ঢেউ। সেই ঢেউয়ে স্রেফ ২ মাসে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২ কোটিরও বেশি মানুষ। এমনই তথ্য উঠে এসেছে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির (CMIE) সমীক্ষায়। এরাজ্যেও তার প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট।
অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই রাজ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে একাধিক বাণিজ্য ক্ষেত্র। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বণিক সভার সঙ্গে একটি বৈঠকে বসে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সভাঘরে এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি সারাদিনে ৩ ঘণ্টার জন্য রেস্তোরাঁ-পানশালা খোলার আবেদনে সায় দেন। বণিক সভার সদস্যদের আবেদনে সাড়া দিয়ে মমতা জানালেন, বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৮ টা পর্যন্ত সমস্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালা খোলা যাবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে যেন কর্মচারীরা কমপক্ষে করোনা ভ্যাকসিনের ১ টি ডোজ় নিয়ে তারপরই কাজে যোগ দেন। মোট কর্মীদের ৫০ শতাংশ কাজ করতে পারবে এবং গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম বলবৎ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও কবে থেকে সেটা খোলা যাবে তা এখনও জানানো হয়নি। বৈঠকে বসে এই সিদ্ধান্তের কথা মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে জানান মমতা। ফলে শীঘ্রই রাজ্য সরকারের তরফে এই মর্মে নির্দেশ জারি করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিন বণিক সভার বৈঠকে উত্থাপন করা হয়, পশ্চিমবঙ্গে হোটেল, রেস্তোরাঁর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ কর্মচারী রয়েছেন যারা এই মুহূর্তে প্রচণ্ড সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন। অনুযোগের সুরে এমনটা মমতাকে জানানোর পর তিনি ৩ ঘণ্টার জন্য রেস্তোরাঁ খোলার বিষয়ে ছাড়পত্র দেন। যদিও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, রাতের দিকে অন্যান্য গতিবিধির উপর নিয়ন্ত্রণ খুব শিগগির তুলে নেওয়া হবে না। একই সঙ্গে তাঁর কঠোর নির্দেশ, কোভিড বিধি কড়াভাবে পালন করতে হবে এবং অনলাইন বিপণনের উপর বেশি জোর দিতে হবে।
এর পাশাপাশি কোনওভাবে জমায়েত না করে বিধিনিষেধ মেনে মাত্র ২৫ শতাংশ গ্রাহকদের শপিং মলে ঢোকার অনুমতি দিয়ে আগামী সময়ে শপিং মলও খোলার ঘোষণা করেন মমতা। আগামী ১৬ জুন থেকে এই ছাড় দেওয়া হতে পারে ইঙ্গিত দেন তিনি। কর্মীরা যাতে টিকা নিয়েই কাজে যোগ দেন সেটাও নিশ্চিত করতে বলেছেন মমতা। এর পাশাপাশি খুচরো দোকানগুলি খোলার সময়সীমাও দুপুর ৩ টে থেকে বাড়িয়ে ৪ টে করার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।