বাংলা ব্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ এবং ফসিলসের প্রাক্তন বেসিস্ট চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের (Chandramouli Biswas) অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সঙ্গীতপ্রেমীরা। মাত্র ৪৮ বছর বয়সে তাঁর (Chandramouli Biswas) মৃত্যু শুধুই নয়, ঘটেছে আত্মহননের মর্মান্তিক ঘটনায়। রবিবার সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার বাড়ি থেকে শিল্পীর (Chandramouli Biswas) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
২০১৮ সালে শারীরিক সমস্যার কারণে ফসিলস ছেড়েছিলেন চন্দ্রমৌলি। তবুও দীর্ঘ ১৮ বছরের সম্পর্কের স্মৃতি কখনও ফিকে হয়নি। বর্তমানে তিনি ‘গোলক’ ও ‘জম্বি কেজ কন্ট্রোল’-এর মতো ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রবিবার পরিবারের সদস্যরা বাইরে থাকার সময় চরম সিদ্ধান্ত নেন চন্দ্রমৌলি। প্রথমে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান ‘গোলক’-এর ভোকালিস্ট মহুল চক্রবর্তী, যিনি তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অবসাদের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
রবিবার দুপুরে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার বদলান চন্দ্রমৌলি। তখনও কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি এমন কিছু ঘটতে পারে। তাঁর অকাল মৃত্যুতে স্তম্ভিত ব্যান্ডমহল। তাঁর প্রয়াণের পরেও রবিবার রাতে মঞ্চে উঠেছিল ফসিলস। কান্না চেপে, স্মৃতির সঙ্গে সুর মিশিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানায় রূপম ইসলামের নেতৃত্বাধীন ব্যান্ড।
সোমবার দুপুরে ফেসবুকে চন্দ্রমৌলির প্রতি আবেগঘন বার্তা শেয়ার করেন রূপম ইসলাম। তিনি লেখেন, “আমাদের সবসময় কথা হতো দর্শন ও শিল্প নিয়ে। কিছু গান শুধু তোর জন্য তুলে রেখেছিলাম, যেমন ‘আদমের সন্তান’, ‘আমি তোমায় ভালবাসি’। গত বছর আমরা নতুন কিছু গান নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমি অপেক্ষা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেই অপেক্ষার কোনও শেষ নেই। কারণ, তুই আর নেই।”
চন্দ্রমৌলির প্রাণখোলা হাসি এবং জীবনভর বাঁচার উদাহরণ চিরকাল নিজের হৃদয়ে গুছিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দেন রূপম। তিনি লেখেন, “আমি তোকে মৃতদেহের মুখে চিনতে চাই না। তুই সৃষ্টিশীলতাতেই ফিরে আসছিলি, কিন্তু মাঝপথেই সব থেমে গেল। হয়তো একদিন তোকে নিয়ে বই লিখব। তবে রক আমাদের একসঙ্গে বেঁধেছিল, আর শেষবেলাতেও তোকে বলতে চাই— রক অন!” চন্দ্রমৌলির মতো প্রতিভাবান শিল্পীর প্রয়াণ বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। তাঁর সৃষ্টির রেশ এবং সুরেলা সফর বাংলা সঙ্গীতের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।