রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia- Ukraine war) বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং ভয়াবহ। দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কুর্স্কের পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেছেন যে, সেখানে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ঘেরা নেই বরং তারা সাহসের সাথে রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিপ্রেক্ষিত, কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন যে, ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জীবন রক্ষা করতে রাশিয়া প্রস্তুত, তবে তারা কেবল তখনই সাহায্য করবে যদি ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করে।
এই সংঘর্ষের (Russia- Ukraine war) পটভূমিতে, কুর্স্কের খ্যাতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সামরিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন যে রাশিয়া এখন কুর্স্কের দখল লাভের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা ইউক্রেনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। কুর্স্ক ইউক্রেনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল এবং তার দখল হারানো ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য বড় একটি আঘাত হবে। অন্যদিকে, এই যুদ্ধের সংকট আরও গভীর হতে পারে, কারণ রাশিয়ার আক্রমণ সুমি অঞ্চলের দিকে বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যেখানে ইউক্রেনের প্রতিরোধ আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন মার্কিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেওয়ার পরও যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে সরাসরি কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি। পুতিনের এই অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ তার উক্তি অনেকাংশে যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ানোর মতো ছিল। জেলেনস্কি, এর বিপরীতে, পুতিনের আগ্রাসনকে প্রতিরোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক মিত্রদের সমর্থন চাইছেন এবং তাদের রুশ অবস্থান নিরীক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, ইউক্রেনের কাছে একটি সাফল্য এসেছে, যেখানে দেশীয়ভাবে তৈরি নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেন বড় আক্রমণ চালিয়েছে। এর পাল্লা এক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত, যা ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতার উল্লেখযোগ্য এক উন্নতির দিক নির্দেশ করে। ইউক্রেনের এই সাফল্যকে কিয়েভে স্বাগত জানানো হয়েছে, এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারও ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির দাবিতে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন চাইছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ:
এখন যে অবস্থায় যুদ্ধ চলমান, তার মধ্যে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুতিনের উপর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ আনা এবং যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলিকে কার্যকর করতে ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলির অবিচলিত ভূমিকা প্রয়োজন। তবে, একদিকে ইউক্রেনের সাহসী প্রতিরোধ এবং অপরদিকে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাব, এই যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে। যুদ্ধের পরিণতি শুধুমাত্র ইউক্রেন বা রাশিয়ার জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং অর্থনীতির জন্যও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর স্বতন্ত্র সাফল্য এবং বৃহত্তর সামরিক সহায়তা পাওয়ার পরেও, তাদের লড়াই কেবল সামরিক ক্ষেত্রে নয়, রাজনৈতিক কৌশলে এক নতুন মোড় নিতে পারে।