রবিবার বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি চালানোর (Salman Khan House Firing) ঘটনায় মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের তৎপরতা চোখে পড়ছে। সোমবার গভীর রাতে গুজরাটের ভুজ থেকে অভিযুক্ত দুজন শ্যুটারকেই গ্রেফতার করেছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এই দুই অভিযুক্ত বাইকে চড়ে সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি চালায়। মঙ্গলবার মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে। অভিযুক্তদের নাম ভিকি গুপ্তা ও সুনীল পাল। ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা অভিযুক্তদের নিয়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
মনে করা হচ্ছে, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনা ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। দু’জনেই এক মাস আগে থেকে মুম্বই সংলগ্ন পানভেলের একটি সোসাইটিতে বসবাস করছিলেন। ঘটনাটি ঘটানোর আগে, উভয় অভিযুক্তই সালমান খানের বাড়ির রেকি করেছিল, তারপরে রবিবার গুলি চালানোর ঘটনা ঘটায়।
সোমবার এই ঘটনার দায় স্বীকার করে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোই। আনমোল বিষ্ণোই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বলেন যে এই ঘটনার সাথে তার গ্যাং জড়িত। তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালের কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার পর থেকেই সালমান খান হুমকি পেয়ে আসছেন। কৃষ্ণসার হরিণ বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র বলে মনে করা হয়।
এদিকে, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে রোহিত গোদারার শ্যুটার কালুকেও দেখা গেছে। রোহিত গোদারাকে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলে মনে করা হয়। রোহিত গোদারা শ্যুটার এবং অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক চালান। পুলিশ জানায়, লরেন্সের ভাই আনমোল বিষ্ণোই সালমানের বাড়িতে গুলি চালানোর দায়িত্ব রোহিত গোদারার ওপর দিয়েছিলেন।
এখন সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দুজনকে গুজরাট থেকে মুম্বাইতে আনার প্রস্তুতি চলছে। সুপারস্টারকে নিয়ে সবাই খুব চিন্তিত এবং তার ভক্তরা তাকে পুরোপুরি সমর্থন করছেন। এছাড়া সালমানের বাড়ির বাইরে এই ঘটনার পর তার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে এবং সরকারও এ ব্যাপারে কঠোর হবে বলে মনে হচ্ছে।
মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর অভিযুক্তরা ভাসাই হাইওয়ে অর্থাৎ মুম্বাই আহমেদাবাদ হাইওয়ের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল। মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অভিযুক্তদের ক্রমাগত সন্ধান চালিয়েছে। এছাড়া সাইবার টিম থেকে ডাম্প ডাটাও বের করা হয়েছে। অপরাধ শাখার আধিকারিক নিশ্চিত করেছেন যে ভুজে উভয় অভিযুক্তের উপস্থিতি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে।
এর পরে, ভুজের স্থানীয় অপরাধ দমন শাখাকে এই বিষয়ে অবহিত করা হয়। কারণ সন্দেহ ছিল যে স্থানীয় পুলিশকে না জানিয়ে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে গেলে তাদের উপর গুলি চালানো হতে পারে কারণ অভিযুক্তরা পেশাদার অপরাধী। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সতর্কতা অবলম্বন করে এবং স্থানীয় পুলিশের দলকে সঙ্গে নিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ক্রাইম ব্রাঞ্চ ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে একটি দল ভুজে পৌঁছয়। গ্রেফতার হওয়া দুই আসামির বিস্তারিত পরিচয় বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তাদের একজনের নাম নিখিল গুপ্ত এবং অন্যজনের নাম সাগর পাল।
অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার ঘটনাটি ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের শীর্ষ কর্তারা। তবে এই ঘটনায় লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের ভূমিকা আছে কিনা তা অস্বীকার করেননি ক্রাইম ব্রাঞ্চের প্রধান। তিনি বলেছেন যে অভিযুক্তদের মুম্বাই আনার পর তদন্তের গতি বাড়ানো হবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যে পিস্তলের সাহায্যে গুলি চালানো হয়েছিল, তা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অভিযুক্তদের তল্লাশিতে কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তারা জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। সন্দেহ করা হচ্ছে, অভিযুক্তরা অস্ত্রটি কোথাও লুকিয়ে রেখেছে বা ফেলে দিয়েছে। তার তদন্ত করা হচ্ছে। কারণ এই মামলায় ব্যালিস্টিক রিপোর্টের জন্য পিস্তল খুঁজে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।