ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন স্যাম পিত্রোদা (Sam Pitroda)। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে এই তথ্য জানিয়েছেন। ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী এবং ডঃ মনমোহন সিং-এর পরামর্শদাতা স্যাম পিত্রোদা বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য খবরের শিরোনামে এসেছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ‘বর্ণবাদী’ মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে।
श्री सैम पित्रोदा ने अपनी मर्ज़ी से इंडियन ओवरसीज कांग्रेस के अध्यक्ष पद से इस्तीफ़ा देने का फ़ैसला किया है। कांग्रेस अध्यक्ष ने उनका इस्तीफ़ा स्वीकार कर लिया है।
Mr. Sam Pitroda has decided to step down as Chairman of the Indian Overseas Congress of his own accord. The Congress…
— Jairam Ramesh (@Jairam_Ramesh) May 8, 2024
আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ ঘোষণা করেছেন যে স্যাম পিত্রোদা ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ‘মিঃ পিত্রোদা স্বেচ্ছায় ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন’।
স্যাম পিত্রোদার পুরো নাম সত্যনারায়ণ গঙ্গারাম পিত্রোদা। তিনি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক উদ্ভাবন করেছেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ভেসকম সুইচিং কোম্পানিতে যোগদান করেন। পরের বছরই ১৯৭৫ সালে তিনি বৈদ্যুতিন ডায়েরি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তাঁর দক্ষতা প্রমাণ করেন। পরবর্তী চার বছরের মধ্যে তিনি ৫৮০টি ডিএসএস সুইচ তৈরি করেন এবং ১৯৭৮ সালে এটি চালু করেন।
ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান স্যাম পিত্রোদা একটি পডকাস্টে বলেছিলেন, ‘আমরা ৭৫ বছর ধরে খুব সুখী বাতাবরণে বাস করছি, কয়েকটি লড়াইয়ের কথা বাদ দিলে দেখব, আমরা একসঙ্গে বাস করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের মতো বৈচিত্র্যে পূর্ণ দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারি। যেখানে পূর্বের বাসিন্দারা চিনাদের মতো দেখতে, পশ্চিমে ভারতের লোকেরা দেখতে আরবিদের মতো, উত্তরে লোকেরা গৌর বর্ণ এবং দক্ষিণ ভারতীয়রা দেখতে আফ্রিকানদের মতো।’ উনি বলেন, ‘এ কোনও ব্যাপার না, আমরা সবাই ভাই-বোন। ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন রীতিনীতি, খাবার, ধর্ম, ভাষা আলাদা আলাদা, কিন্তু ভারতের মানুষ একে অপরকে সম্মান করে।’
আজ তেলেঙ্গানায় প্রচারের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি আজ রেগে আছি। কেউ আমাকে গালিগালাজ করলে আমি রাগ করি না। আমি সহ্য করতে পারি। কিন্তু শাহজাদের (রাহুল গান্ধী) দার্শনিক (স্যাম পিত্রোদা) এত বড় গালিগালাজ করেছেন, যা আমাকে ক্ষুব্ধ করেছে।’ মোদি প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘আমার দেশে কি গায়ের রঙের ওপর ভিত্তি করে মানুষের ক্ষমতা নির্ধারণ করা হবে?
পিত্রোদার মন্তব্যকে ‘বর্ণবাদী’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ত্বকের রঙের ভিত্তিতে দেশবাসীকে অপমান করার প্রচেষ্টাকে মানুষ সহ্য করবে না।’ রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে মোদি বলেন, তিনি এখন বুঝতে পেরেছেন যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেস দ্রৌপদী মুর্মুকে এইজন্য হারাতে চেয়েছিল, কারণ ওনার গায়ের রঙ্গ কালো। পিত্রোদার কথিত মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের মধ্যে মোদি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমার দেশের ত্বকের রঙের ভিত্তিতে কি মানুষের ক্ষমতা নির্ধারণ করা হবে? ‘রঙের এই খেলার অনুমতি শাহজাদাকে গায়ের কে দিয়েছে?’
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আজ আমি স্যাম পিত্রোডার বক্তব্য দেখেছি। উনি বলেছেন, ‘উত্তর-পূর্বের মানুষ দেখতে চিনাদের মতো। এটি একটি দুঃখজনক উক্তি। চিনাদের সঙ্গে আমাদের মিল খুঁজে বের করে তারা কী প্রমাণ করতে চায় তা জানি না। রাহুল গান্ধীর আশেপাশে যে-ই থাকুক না কেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি খুবই ভুল। রাহুল গান্ধী এবং তাঁর চারপাশের মানুষ উত্তর-পূর্বকে অপমান করে চলেছেন। আমি স্যাম পিত্রোদাকে বলতে চাই যে, উত্তর-পূর্বের মানুষ গর্বিত ভারতীয়।’
প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম বলেন, ‘স্যাম পিত্রোদার বক্তব্য তাঁর নয়, রাহুল গান্ধীর। রাহুল গান্ধী যা চান, তাঁরা তাই বলেন। স্যাম পিত্রোদার এই বক্তব্য মহাত্মা গান্ধীর আত্মাকে দুঃখিত ও কাঁদতে বাধ্য করবে। আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে আবেদন করব যে এই ধরনের বক্তব্য ‘দেশ বিরোধী’ বিবেচনা করা উচিত এবং এই ধরনের লোকদের বিরুদ্ধে, তাঁর দলের বিরুদ্ধে, এই ধরনের চিন্তাভাবনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’