লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ব্যাপক জয় পেয়েছে তৃণমূল। ২৯টি আসন একাই দখল করেছে ঘাসফুল শিবির। আর তৃণমূলের জয়ের পিছনে অন্যতম কারণ হিসাবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প। একাংশ মহিলাদের বিপুল ভোট তৃণমূলের জয়ের রাস্তা মসৃণ করেছে। এবার সেই একই বুলি শোনা গেল দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায়ের (Saugata Roy) গলায়। বললেন, “ঝুপড়ির গরিব মহিলারা যাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডার পেয়েছেন তাঁরাই আমাদের রক্ষাকর্ত্রী।” আবার কোন মহিলারা ভোট দেননি সে কথাও বলে দিলেন সাংসদ।
মঙ্গলবার বরানগর রবীন্দ্রসদনে সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান মঞ্চে সৌগতর (Saugata Roy) গলায় শোনা গেল আত্মসমালোচনার সুর। তিনি বলেন, “মহিলারাই আমাদের জিতিয়েছেন। লক্ষ্মীর ভান্ডার যদি না থাকত…যাঁরা বহুতলে থাকেন, অনেক জায়গায় তাঁরা আমাদের ভোট দেয়নি। ঝুপড়ির গরিব মহিলারা যাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়েছেন তাঁরাই আমাদের রক্ষাকর্ত্রী। আমাদের ঢেলে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু শহরের একটা অংশ আমাদের ভোট দেননি। মনে রাখতে হবে যাঁরা অবস্থাপন্ন, বড় ফ্ল্যাটে থাকেন তাঁরা ভোট দেননি।” সঙ্গে এও যোগ করে বলেন, “আর সংখ্যালঘুরা আমাদের সেন্ট পার্সেন্ট ভোট দিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রচারে তৃণমূলের মুখ্য হাতিয়ার ছিল লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। অন্য়ান্য প্রকল্পের পাশাপাশি এই লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে জোর দিতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উত্তর থেকে দক্ষিণ বিভিন্ন জেলায় গিয়ে মঞ্চ থেকে অভিষেককে বলতে শোনা যায় যতদিন তৃণমূল থাকবে এই প্রকল্প বন্ধ হবে না। বলা বাহুল্য, গ্রাম কিংবা শহরের নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলাদের কাছে এই প্রকল্প থেকে পাওয়া হাজার টাকা যে কতটা প্রয়োজনীয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “উনি কিছুটা হলেও সত্যি হয়েছেন। উত্তরবঙ্গের লোকেরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাননি? সন্দেশখালিতে মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাননি? স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টি ওয়ার্ডে লিড করেছে বিজেপি । আসলে জনগণ প্রত্যাখান করছে এই সরকারকে।” অপরদিকে, সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীও এই ধরনের কথা বলেছেন। সরকারি টাকা দিয়ে মানুষ কেনা গোলাম হয়ে যাবে এই চিন্তাভাবনা বরদাস্ত করা যায় না।”