কালীঘাটের কাকু বা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (Sujay Krishna Bhadra) অসুস্থতা এখন আদালতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জ গঠনের ঠিক আগেই ‘গুরুতর অসুস্থ’ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি (Sujay Krishna Bhadra) । বর্তমানে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিসিইউ-তে চিকিৎসাধীন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra) ।
প্রথমে এসএসকেএম, তারপর একটি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে শেষমেশ বাইপাসের ধারের এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। চিকিৎসকদের মতে, তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি এখনও অস্বাভাবিক। তবে রাজনৈতিক মহলে এবং আদালতে এই অসুস্থতাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের অসুস্থতার সময়কাল এবং প্রেক্ষাপট নিয়ে চলছে জোর চর্চা। আদালতে মামলার প্রসঙ্গ তুললে আইনজীবীদের মধ্যে মতবিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই অসুস্থতা শুধুমাত্র একটি ওয়াইওয়াশের ঘটনা যাতে মামলাটি আরও দেরি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে আদালত ও চিকিৎসা মহল উভয়ের নজর এখন কালীঘাটের কাকুর শারীরিক অবস্থার দিকে। নতুন বছরে তার অসুস্থতা এবং মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আদালতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী জানিয়েছেন, ১০ বছরের বেশি হওয়ায় কাকুর পেসমেকারের ব্যাটারি কাজ করছে না। অন্যদিকে, বেসরকারি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, হৃদযন্ত্রে কোনও সমস্যা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের নেই। হাসপাতালে মেডিক্যাল রিপোর্টে নতুন করে একাধিক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে কার্ডিওলজি সংক্রান্ত সমস্যা উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও পেসমেকার বিকল হওয়ার বিষয়টি আদালতে তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আলিপুরের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট এবং বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বক্তব্যে বিস্তর অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের পেসমেকারে কোনও ত্রুটি নেই। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, পেসমেকার পরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ‘সেন্ট জুড’ নিশ্চিত করেছে যে, এর মেয়াদ এখনও আড়াই বছর বাকি। ২০১১ সালে বসানো এই পেসমেকার এখনও কার্যক্ষম এবং তার শারীরিক অবস্থার উপর এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।
হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ভেন্টিলেটরে থাকাকালীনও পেসমেকারের উপর নির্ভরশীল ছিলেন না। তাদের বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেছে এসএসকেএম হাসপাতালের রিপোর্টও।
তবে আদালতে এই দাবি উত্থাপন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যের অসঙ্গতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিরোধী মহল। তারা প্রশ্ন তুলেছে, পেসমেকার বিকল হওয়ার দাবি যদি ভিত্তিহীন হয়, তবে তা আদালতে কেন উপস্থাপিত হলেন না সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র? এই বিষয়টি মামলার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার একটি কৌশল কি না, তা নিয়েও চলছে জোর চর্চা।