নিউজ ডেস্ক: তাঁর ব্যক্তিগত জীবন বিতর্কে বিদ্ধ। মেপে চলার মতো নজির তাঁর জীবনে বেশি নেই। সিনেমা জগতের সেই ‘ভাইজান’ই কিন্তু কৃষক আন্দোলন নিয়ে সবচেয়ে ভারসাম্য রেখে কথা বললেন। বলিউডের বৃহদাংশ যখন কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে ‘ভারতের ঐক্য’ প্রমাণে ব্যস্ত, তখন তাঁর জবাব নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
টিনসেল টাউনের তিন খানের অন্যতম সলমানকে বৃহস্পতিবার কৃষক আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে সঠিক কাজটা করা উচিত। সবচেয়ে ভালো কাজটা করা উচিত।’ একটি মিউজিক শো-এর উদ্বোধনে সলমানের এই কথার পরে টুইটারে নানা মন্তব্য শুরু হয়। একজন লেখেন — সরকার গোটা বলিউডকে কিনতে পারলেও সলমান খানকে কিনতে পারবে না। সেই টুইটটি শেয়ার করেন ‘ভাইজান’।
অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগন থেকে সচিন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি — সরকারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিতে কার্যত রেষারেষি পড়ে গিয়েছে তারকাদের মধ্যে। কিন্তু খান-ত্রয়ী আপাতত নীরবই ছিলেন। প্রথম মুখ খুললেন সলমান। শাহরুখ, আমির এখনও কিছু বলেননি। তবে মুখ খুলেছেন সোনু সুদ।করোনাপর্বে বারবার যাঁর মানবিকতা শিরোনাম হয়েছে, সেই অভিনেতার ছোট্ট টুইট — ভুলকে ঠিক বললে ঘুম আসবে কী করে?
পপ তারকা রিহানা থেকে প্রাক্তন পর্নস্টার মিয়া খলিফা বা পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ — আন্তর্জাতিক মহলের আলোচনায় উঠে এসেছে দিল্লির কৃষক আন্দোলন। তার প্রেক্ষিতে সরকারের পাল্টা বিবৃতি এবং নির্মলা সীতারামন, এস জয়শঙ্কর হয়ে অমিত শাহের ময়দানে নেমে পড়ায় বিতর্ক জোরদার হয়েছে। সকলেই বোঝানোর চেষ্টা করছেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এখানে ভিন দেশের কেউ যেন নাক না-গলায়। সেলিব্রিটিদের টুইটের বিষয়বস্ত, এমনকী ভাষাও অনেকক্ষেত্রে প্রায় এক। যা নিয়েও রসিকতা, আক্রমণের জোয়ার উঠেছে। ডেরেক ও ব্রায়েনের মতো বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা মোদীর অতীতের বক্তব্য তুলে ধরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনিও বিভিন্ন সময়ে ভিন দেশের ‘অভ্যন্তরীণ’ বিষয়ে মুখ খুলেছেন।
এরই মধ্যে অবশ্য বারবাডোসে কোভিশিল্ডের ১ লক্ষ ডোজ পাঠিয়ে ‘সৌহার্দ্য’ প্রকাশ করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। রিহানা ওই দেশেরই মানুষ। টিকার জন্য মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বারবাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া অ্যামোর মোটলি। টিকা চেয়ে আগে মোদীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় একটি চিঠিতে মোটলি লিখেছেন — কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের জন্য আপনাকে, আপনার সরকারকে এবং ভারতের জনগণকে আমার ও আমার সরকার, নাগরকিদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
এ দিকে, কৃষি আইন ও কৃষক আন্দোলন নিয়ে রাজ্যসভায় বিতর্ক অব্যাহত। শুক্রবার, বাজেট সেশনের ষষ্ঠ দিনেও কৃষক-ইস্যু সমাধানে তেমন অগ্রগতি না-হওয়ায় সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধী সাংসদরা। লোকসভাতেও তুমুল হট্টগোল চলে এ দিন। এই নিয়ে পরপর তিন দিন ব্যাহত হলো অধিবেশনের কাজ।