আবু আলী, ঢাকা: পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা দু’দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির ঢাকাস্থ হাই কমিশন। ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে কোন ধরণের আগাম ঘোষণা ছাড়াই অনেকটা নিঃশব্দে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। সূত্রের তাতপর্যপূর্ণ সফরটির খবর চাউর হলে কূটনৈতিক অঙ্গন ও পর্যবেক্ষক মহলে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। অবশ্য দিল্লির বিদেশ সচিব ঢাকায় পৌছানোর অল্পক্ষণে মধ্যেই সাউথ ব্লক এবং ঢাকাস্থ হাই কমিশনের তরফে অভিন্ন তবে সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রচার করা হয়। তাতে বলা হয়, ১৮ থেকে ১৯ আগস্ট বাংলাদেশে কাটাবেন তিনি। পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতেই এ সফর। এদিকে সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সফরটি ঝটিকা নয় বরং রেগুলার বা নিয়মিত বলে দাবি করেছেন হোস্ট বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
১৮ আগস্ট মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপের তিনি এ দাবি করেন। বলেন, আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে অনেক ইন্টার্যাকশন হয়। তবে এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে সে হিসেবে কমই হয়েছে। সব সময় আলোচনায় সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি থাকে। তবে এবার কোভিড-১৯ নিয়ে সহযোগিতার বিষয়টি থাকছে। সচিব বলেন, তাদের দেশে এখন করোনার ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চলছে। ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা কে কোন পর্যায়ে আছি সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গত ছয় মাসে বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষ করে ট্রান্সশিপমেন্ট ও রেলওয়ের সহযোগিতা ত্বরান্বিত হয়েছে। শ্রিংলার সঙ্গে আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু স্থান পাবে কিনা জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দেখি, হতে পারে। তারা তো এ বিষয়ে আমাদের সহযোগিতার কথা বলে আসছে। তারা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করছে যাতে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন হতে পারে। এ বিষয়ে আপডেট জানতে চাইতে পারি। মোমেন আরো বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। এ সম্পর্কের যত্ন নেওয়া লাগে যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়। এছাড়া সম্প্রতি ভারতের মিডিয়ায় কিছু কাল্পনিক নিউজ হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কথা হবে যাতে সম্পর্কে কোনো গ্যাপ না থাকে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করছেন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক হয়। কূটনৈতিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এ সময়ে বিশ্বের অন্য প্রান্তের মতো দুই নিকট প্রতিবেশীর সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিরতি টানতে হয়েছে। এরপরও পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় যে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করতে দুই দেশ নতুন নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। গত ছয় মাসে দুই পক্ষের অনির্ধারিত অনেকগুলো বৈঠক স্থগিত হলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার ফোনে কথাও বলেছেন। সামগ্রিকভাবে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একে অন্যকে কীভাবে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে এ বিষয়টির পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে ঢাকা সফরে আলোচনা করতে পারেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এ বছরের জানুয়ারিতে সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন।