সুপ্রিম কোর্ট সোমবার পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক ও অ-শিক্ষক কর্মীদের হাজার হাজার নিয়োগ বাতিলের মামলায় (SSC Scam) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রী পরিষদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত স্থগিত করেছে। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। মামলাটি ২০১৬ সালের ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিলের সঙ্গে সম্পর্কিত।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে। গত সোমবার হাইকোর্ট শিক্ষক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং প্রায় ২৬ হাজার প্রার্থীকে “অবৈধ” নিয়োগের পর প্রাপ্ত বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে দেয়। কলকাতা হাইকোর্ট সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহায়তায় স্কুলগুলিতে রাজ্য স্তরের সিলেকশন টেস্ট-২০১৬ (এসএলএসটি) এর নির্বাচন প্রক্রিয়াটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে এবং এর মাধ্যমে করা সমস্ত নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল। উচ্চ আদালতের সেই রায়ে অবশ্য কোনও স্থগিতাদেশ দিল না শীর্ষ আদালত। তারা জানাল, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী সোমবার।
কলকাতা হাই কোর্ট তাদের রায়ে জানিয়েছিল, মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন, এই সময় নির্বাচন চলছে। এখন সিবিআই তদন্ত করলে তো পুরো মন্ত্রিসভা জেলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট, যা কার্যকর করা সম্ভব নয়। ওই রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। তার পরেই সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি দেবাংশু বাসাক ও বিচারপতি মো. শব্বর রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার আরও তদন্ত করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল। বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশও দিয়েছিল। হাই কোর্ট সেদিন জানিয়েছিল, এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। প্রয়োজনে তারা সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অভিযোগ ছিল, অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য বাড়তি পদ তৈরি করা হয়েছিল এসএসসিতে। সেই পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল খোদ রাজ্যের মন্ত্রিসভা। কলকাতা হাইকোর্ট বলেছিল, সিবিআই চাইলে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। কিন্তু, আজ কলকাতা হাইকোর্টের সেই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। আপাতত কিছুটা হলেও স্বস্তি পেল মমতা সরকার। তবে নিয়োগ বাতিলের রায় অব্যাহত রাখা হয়েছে।