নয়াদিল্লি: বাংলায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা কৌশল তৈরির কাজ তুঙ্গে। শাসক ও বিরোধী পক্ষ তাদের পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে একযোগে কাজ শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, দিল্লির সুকান্ত মজুমদারের বাসভবনে (Sukanta Majumdar) এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রাজ্যের বিজেপি সাংসদরা অংশ নেন। তবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি।
বৈঠকের শুরুতে, সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এখন আমি মন্ত্রী হয়ে একটি বড় বাড়ি পেয়েছি। দিল্লিতে এই বাড়িটাই এখন রাজ্য বিজেপির অফিস। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সংসদের প্রতি অধিবেশনের পরে একবার করে দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করব। আজকের দিনটি নির্ধারিত হয়েছিল, কারণ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও দিল্লিতে এসেছেন (Sukanta Majumdar)। ‘রথ দেখা, কলা বেচা’ একসাথে হয়ে যাবে। তাঁর উপস্থিতিতে এই বৈঠকে সাংসদরা আলোচনায় বসলে রাজনৈতিক আলোচনা হবে এবং আমাদের খাওয়া-দাওয়ার সময়টাও কাটবে। খাওয়া-দাওয়া ছাড়া তো বাঙালির আলোচনা হয় না!”
এদিনের বৈঠকটি শুরুর আগে সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) একে সাংগঠনিক বৈঠক হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যেখানে সাংসদরা দলের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সুকান্তের মতে, এই বৈঠকে একদিকে যেমন সাংসদদের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে, তেমনই আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য দলের পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই মিলে ২৬ সালের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছি, যেখানে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে হারিয়ে বাংলাকে ‘সোনার বাংলা’ বানানো।”
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি। এই বৈঠকের পরে, সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছিলেন যে, রাজনৈতিক আলোচনা ছাড়াও, এই বৈঠকের মাধ্যমে সাংসদদের থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সেগুলো পরবর্তী সাংগঠনিক বৈঠকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।
দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রসঙ্গেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন সুকান্ত (Sukanta Majumdar)। ২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে, তিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু কথা বলেন। তিনি বলেন, “এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি এই পদে থাকব কি না।”
এদিকে, শুভেন্দু অধিকারী তার উপস্থিতি এবং মন্তব্যের মাধ্যমে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বিজেপির কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে, রাজনৈতিক মহলে এর মাধ্যমে তিনি আরও কিছু গভীর ইঙ্গিতও দিয়েছেন, যা ভবিষ্যতে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব এবং নির্বাচনী কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
এই বৈঠক, যা রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক কৌশল এবং আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির একটি অংশ, তা দলীয় শক্তি বৃদ্ধি এবং সাংগঠনিক সমন্বয়ের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি, দিল্লিতে বিজেপির কার্যক্রমের কেন্দ্রে সুকান্ত মজুমদারের বাড়িটি থাকার কারণে, এটি শুধু সংগঠনের ভিতরকার সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে, বরং রাজ্য বিজেপির ভবিষ্যতের রণকৌশলের দিকেও একটি দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য:
“মন্ত্রী হওয়ার পর একটা বড় বাড়ি পেয়েছি। দিল্লিতে এটাই এখন রাজ্য বিজেপির অফিস। আমরা ঠিক করেছি, সংসদের প্রতি অধিবেশনে দলের সাংসদদের সঙ্গে একবার করে আলোচনায় বসব। এই বৈঠক সম্পর্কে সুকান্ত আরও বলেন, “আমরা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে চাই। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরও সুসংহত করতে আমাদের সকলের একযোগভাবে কাজ করতে হবে। আমি আশা করি, আমাদের সাংসদরা দলের জন্য আরও ভাল পরামর্শ দেবেন এবং আমরা সেই পরামর্শকে কার্যকরীভাবে কাজে লাগাব।”
শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি:
শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারের দিল্লির বাড়িতে গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি, এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে তিনি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিন উপস্থিত ছিলেন শমিক ভট্টাচার্য,জগন্নাথ সরকার সহ অন্যান্যরা। এদিন দলীয় ঐক্য এবং অগ্রগতির জন্য শুভেন্দু অধিকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে।
নির্বাচনী প্রস্তুতি:
বৈঠক শেষে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা সবাই মিলে ২৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাজিত করে বাংলাকে সোনার বাংলা বানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
এটি স্পষ্ট যে, বিজেপি এবার বাংলার রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে, এবং সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে দল এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।