খবর এইসময়,নিউজ ডেস্কঃ দীর্ঘ ৫৮০ দিন বন্দী জীবন কাটানোর পর জামিন পেলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় । চিটফান্ড কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখে তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। অবশেষে বুধবার দীর্ঘ ৫৮০ দিন পরে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুমন চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত সংবাদপত্রের সাথে জড়িত ছিল বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা আইকোর। সেই সংস্থার জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসতেই তদন্ত শুরু করে সিবিআই। চিটফান্ড সংস্থা আইকোরের মালিক অনুকূল মাইতি গ্রেফতার হওয়ার পরেই সুমন চট্টোপাধ্যায়ের নাম জড়ায় ওই কেলেঙ্কারিতে। তারপরে একাধিকবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে জেরার জন্য ডাকা হয় সুমনাবাবুকে। ২০১৮ সালের ২০ডিসেম্বর দফায় দফায় দীর্ঘক্ষণ ধরে জেরা করা হয়ে তাঁকে। তদন্তে অসহযোগিতা এবং তথ্য গোপন করার অপরাধে স্বনামধন্য এই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে সিবিআই। গ্রেফতার হওয়ার সময়েও একটি বহুল প্রচারিত বাংলা সংবাদপত্রের সম্পাদকের পদে আসীন ছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে সংবাদ মাধ্যমের একাধিক কর্তা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে সাংবাদিক কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। এক বছর পরে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে সংবাদ প্রতিদিনের সম্পাদক সৃঞ্জয় বসুকেও গ্রেফতার করে সিবিআই।
ভুবনেশ্বরে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে ওই চিটফান্ড কাণ্ডের শুনানি চলায় গ্রেফতার হওয়ার পরে ভুবনেশ্বরেই রাখা হয়েছিল সুমন চট্টোপাধ্যায়কে। ভুবনেশ্বরের জেলেই গত ১৯ মাস কাটিয়েছেন তিনি। সুদীর্ঘ ওই কারাবাসের কারণে শারীরিক অসুস্থতার শিকার হতে হয় সুমনবাবুকে। হার্টের সমস্যা তো ছিলই, সেই সঙ্গে দোসর হয় ফুসফুসের সমস্যা। ফলে ভুবনেশ্বরের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন সুমন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই হাসপাতালে ক্রমশ বাড়ছে করোনা রোগীদের সংখ্যা। এই অবস্থায় অসুস্থ সুমনবাবুর শরীরেও করোনা থাবা বসাতে পারে বলে আশঙ্কা করেন চিকিৎসকেরা। সুমনবাবুর আইনজীবীদের সওয়াল শোনার পর এই যুক্তিকে মান্যতা দিয়েছে আদালত। এবংমঞ্জুর করা হয়েছে সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের জামিন।
২০১৩ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশ্যে আসে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি। অর্থলগ্নি সংস্থা সারদার মাধ্যমে ফাঁস হয় এই সুবিশাল আর্থিক কেলেঙ্কারি। সারদার অধীনে অনেক সংবাদ মাধ্যম ছিল। একইভাবে অনেক সংবাদপত্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিল বহু চিটফান্ড কোম্পানি।
সুমনবাবুর জামিন পাওয়ার খবর ফেসবুকে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কস্তুরী চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে রায়ের প্রতিলিপিও পেশ করেছেন তিনি। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ফালি নরিমান, বিচারপতি নবীন সিনহা ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোরামে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে শুনানি হয় এই মামলার।