ভারতের সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার একটি শুনানিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। আদালত এই ধরনের মামলা নিয়ে পুলিশ ও বিচার বিভাগের কার্যক্রমের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। বিশেষ করে, আদালত বলেছে যে আইপিসির ৩০৬ ধারা শুধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে ব্যবহার করা উচিত নয়, যদি তা শুধু নির্যাতিতার পরিবারের আবেগ শান্ত করার জন্য করা হয়।
কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?
বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং কেভি বিশ্বনাথনের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, পুলিশ সহজেই এই ধারাটি প্রয়োগ করছে, কিন্তু এটি যেন শুধুমাত্র আবেগের প্রেক্ষিতে করা না হয়। আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে এই ধরনের মামলায় তদন্তকারীদের কোনো পক্ষকে অবিচারের শিকার হতে দেওয়া উচিত নয় এবং তারা যেন আরও সংবেদনশীলভাবে কাজ করে।
আদালত বলেছে, যখন আত্মহত্যার মামলা হয়, তখন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। যান্ত্রিকভাবে মামলার তদন্ত এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার বদলে, মৃত ব্যক্তির এবং অভিযুক্তের আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে একটি বাস্তবমূলক পদ্ধতি গ্রহণ করা প্রয়োজন। আদালত এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এ ধরনের মামলায় গোঁড়ামি পরিহার করা উচিত এবং বিচারকদের পক্ষে এমন পরিস্থিতি থেকে মুখ ফিরিয়ে না চলার আহ্বান জানিয়েছে।
হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট
এছাড়া, সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের আপিলের পর, আদালত ৩০৬ ধারায় কোনো প্রমাণ না থাকার কারণে, অভিযুক্ত মহেন্দ্র আওয়াইসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। উল্লেখযোগ্য যে, এই মামলায় নিহত ব্যক্তি সুইসাইড নোটে আওয়াইসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন যে, ঋণ ফেরত চাওয়ায় আওয়াইস বিরক্ত ছিলেন, যা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগকে শক্তিশালী করে না।
অতএব, আদালতের এই নির্দেশনা প্রমাণ করে যে, আত্মহত্যায় প্ররোচনার মতো জটিল ও সংবেদনশীল মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া আরও সতর্কতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে পরিচালিত হওয়া উচিত, যাতে সত্যিকারের দোষীদের শাস্তি দেওয়া যায় এবং অসত্য অভিযোগ থেকে নির্দোষ ব্যক্তিরা রক্ষা পায়।