ধারে-ভারে বাংলাদেশ থেকে বহু এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপ ইতিহাসেও সফল দল। সেই দলের বিরুদ্ধে ১৪০ রানের পুঁজি বেশ মামুলিই বলা চলে। এই পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশও পারল না লড়াই করতে। ডেভিড ওয়ার্নার-গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না তানজিম-তাসকিনরা। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ পুরোটা হতেও পারল না। শেষ পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ২৮ রান জিতল অস্ট্রেলিয়া।
আজ শুক্রবার বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতেই বৃষ্টি নামে অ্যান্টিগার আকাশে। যার কারণে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হতে দেরি হয়। যখন মাঠে গড়ায় খেলা তখনও বারবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। কিন্তু সব বাধা ছাপিয়ে জয় অস্ট্রেলিয়ার। ট্রাভিস হেড ৩১ রানের দারুণ শুরুর পর ওয়ার্নারের হাফসেঞ্চুরির বৃষ্টি নামলে ডিএলএসে এগিয়ে থেকে সহজেই জয়ের নাগাল পেয়ে যায় অজিরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন ডেভিড ওয়ার্নার।
সুপার এইটের ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৪০ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ১১.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়া ১০০ রান করার পর বৃষ্টি নামলে জয় পায় ডিএলএস ম্যাথডে। কারণ ১১.২ ওভার পর ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। ফলে সে ব্যবধানেই ম্যাচটি জিতল অসিরা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই হারায় উইকেট। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মিচেল স্টার্কের গতিতে মুখ থুবড়ে পড়েন তানজিদ তামিম। অজি পেসারের ডেলিভারি তানজিদের ব্যাটের নিচের অংশে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। বোল্ড হয়ে শূন্যতে ফেরেন তানজিদ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সেই ধাক্কা সামলে নেয় বাংলাদেশ। দীর্ঘ দিনের রানের খরা কাটিয়ে আজ বাংলাদেশের ঢাল হন নাজমুল হোসেন শান্ত। লিটনের সঙ্গে ৫৮ রানের জুটি বাংলাদেশের আশা দেখান অধিনায়ক। তবে জমে যাওয়া এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশের রানের গতি কমিয়ে দেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। নবম ওভারে বল হাতে এসে লিটনকে নিজের প্রথম শিকার বানান জ্যাম্পা। অজি স্পিনারের বলে সুইপ করার চেষ্টায় বোল্ড হন লিটন। দুই চারে ২৫ বলে ১৬ রান করে ফেরেন বাংলাদেশের ওপেনার। এরপর নামিয়ে দেওয়া হয় রিশাদকে। কিন্তু উইকেটে এসে তিনি টেকেন মোটে ৪ বল। দুই রান যোগ করতে পারা রিশাদকে ফেরান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। জোড়া উইকেট হারানোর মাঝে টিকে যাওয়া শান্ত এগিয়ে নিচ্ছিলেন বাংলাদেশকে। ১৩তম ওভারে অধিনায়কের প্রতিরোধ ভেঙে অজিদের স্বস্তি ফেরান জাম্পা। তার স্টাম্প লাইনের ডেলিভারি সুইপ খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন শান্ত। বল প্যাডে লাগতেই জোরাল আবেদন তোলে অস্ট্রেলিয়া,তাতে সাড়া দিয়ে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। ফলে ৪১ রান করে ভাঙে শান্তর প্রতিরোধ। মাঝে উইকেটে এসে কট এন্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসান।
তবে উইকেটে এসে বাংলাদেশের রানের গতি বাড়াতে দারুণ ভূমিকা রাখেন তাওহিদ। আজও শেষ দিকে বাংলাদেশের রানের গতি বাড়ান তিনি। তাতে সফলও হয়েছেন। ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে বাংলাদেশকে মাঝারি পুঁজি এনে দেন তরুণ এই ব্যাটার।
তবে এই রানটা আরও বাড়ত যদি না হ্যাটট্রিক করে বাধা হয়ে দাঁড়াতেন প্যাট কামিন্স। একে একে মাহমুদউল্লাহ, তাওহিদ ও শেখ মেহেদিকে ফিরিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন অসি পেসার। ২৯ রান দিয়ে সেরা বোলারও আজ তিনি। এ ছাড়া ২৪ রান দিয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন অ্যাডাম জ্যাম্পা।