অল্প রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরিচয় দিল বাংলাদেশের বোলাররা। প্রতিবেশী নেপালকে ২১ রানে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টি২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) সুপার আটে পা রাখল শান্ত, সাকিবরা।
সোমবার কিংসটাউনের আর্নস ভেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৩ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১০৬ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ১৯.২ ওভার সব উইকেট হারিয়ে ৮৫ রানে থামে নেপাল। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নেপালের। দলীয় ৯ রানের মাথায় তানজিম সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন কুশল। ৮ বলে ৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এর দুই বল পরই অনিল শাহকে ফেরান তানজিম। সাকিবের বল তুলে মারতে গিয়ে শান্তর হাতে ধরা পড়েন এই ব্যাটার। আউটের আগে করেন ২ বলে শূণ্য রান। এরপর অধিনায়ক রোহিত পাউডেল বিদায় নেন দ্রুতই। সাকিবের বলে রিশাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ৬ বল খেললেও ১ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর আঘাত হানেন আরেক পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ২৪ রানে তিনি ফেরান আসিফ শেখকে। ১৪ বলে ১৭ করে ফেরেন এই ব্যাটার।
Super Eight groups are locked 🔒
Who are the favourites to make it to the #T20WorldCup 2024 semi-finals? 👀
More ➡️ https://t.co/4E1TYMg7bL pic.twitter.com/IV10hb5iqP
— T20 World Cup (@T20WorldCup) June 17, 2024
এরপরই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। কুশল মাল্লা ও দিপেন্দ্র সিংহ এর ব্যাটে ভর করে দারুন জবাব দেয় নেপাল। এই দুই ব্যাটারের ৫২ রানের জুটিতে জয়ের আশা জাগায় নেপাল। তবে, ৭৬ রানের মাথায় মুস্তাফিজের কল্যাণে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুশল। ৪০ বলে ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে চেষ্টা করলেও দলকে জেতাতে পারেননি দিপেন্দ্র। ৩১ বলে ২৫ রান করেন সাজঘরে ফেরেন তিনি।
Bangladesh through to the Super Eights at #T20WorldCup 2024 🔥#T20WorldCup | #BANvNEP | 📝 https://t.co/SeL9yUJSIo pic.twitter.com/e6wtB0SuJT
— T20 World Cup (@T20WorldCup) June 17, 2024
এর আগে, টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত অধিনায়ক রোহিত পাউডেলের। আর নেপালের সেই সাজানো ফাঁদে পা দেয় বাংলাদেশ। প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ তামিম। সোমপাল কামির প্রথম বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে চেয়েছিলেন তামিম। টাইমিং ঠিক না হওয়ায় বল যায়নি বেশিদূর। ক্যাচ ধরেন কামি নিজেই। আগের ম্যাচে দারুন শুরু এনে দেওয়া তামিম এই ম্যাচে ফিরলেন গোল্ডেন ডাকে। এরপর অধিনায়ক শান্ত এসেও পারেননি চাপ সামাল দিতে। উল্টো ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দলের চাপ বাড়িয়ে ফেরেন সাজঘরে। ৫ বলে ৪ রান করে আইরির বলে বোল্ড হন তিনি। লিটন জীবন পেয়েও জীবন লম্বা করতে পারলেন না। পঞ্চম ওভারে কামিকে পুল করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন লিটন। ১২ বলে ১০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আর লামিচানের ঘূর্ণিতে সুইপ শট খেলতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন তাওহিদ। ৭ বলে ৯ রান করেন তিনি। সবমিলিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান চাপ সামালের চেষ্টা করলেও তাদের জুটি বড় হয়নি।
দলের ৫২ রানের মাথায় ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় মাহমুদউল্লাহকে। সাকিবের শট মিড অফে দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে গেলেও দৌড় দেন তিনি। অপর প্রান্তে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহও ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে যান। তাতেই ভুল হলো। সাকিব বল ফিল্ডারের হাতে থাকায় ফিরে যান, কিন্তু ক্রিজের মাঝামাঝি চলে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ পারেননি। রানআউট হন তিনি। দারুণ ইনিংসের আভাস দেওয়া মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ১৩ রানে।
এরপর উইকেটের মিছিলে যোগ দেন সাকিব নিজে। গত ম্যাচে ৬৪ রানের ইনিংস খেললেও এই ম্যাচে ২২ বলে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। রোহিতের ঘূর্ণিতে আটকা পড়েন তিনি। পিচ করেই হাল্ক বাঁক খেয়ে আঘাত করে সাকিবের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি। এরপর শেষদিকে জাকের আলী-রিশাদ হোসেনরা চেষ্টা করলেও বড় সংগ্রহ গড়তে পারেননি।
A sensational spell of fast bowling earns Tanzim Hasan Sakib the @aramco POTM award 🏅#T20WorldCup | #BANvNEP pic.twitter.com/sove8E0Qan
— T20 World Cup (@T20WorldCup) June 17, 2024
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ : ১৯.৩ ওভারে ১০৬/১০ (তামিম ০, লিটন ১০, শান্ত ৪, সাকিব ১৭, হৃদয় ৯, মাহমুদউল্লাহ ১৩, জাকের ১২, রিশাদ ১৩, তানজিম সাকিব ৩, তাসকিন ১২*, মুস্তাফিজ ৩ ; কামি ৩-০-১০-২, দীপেন্দ্র ৩.৩-০-২২-২, রোহিত ৪-০-২০-২, লামিচানে ৪-১-১৭-২, কুশল ৪-০-২২-০, অবিনাশ ১-০-১০-০)
নেপাল : ১৯.২ ওভারে ৮৫/১০ (কুশল ৪, আসিফ ১৭, অনিল ০, রোহিত ১, সন্দীপ ১, মাল্লা ২৭, দিপেন্দ্র ২৫, গুলশান ০, কামি ০, লামিচানে ০, বোহারা ০; তানজিম ৪-২-৭-৪, তাসকিন ৪-০-২৯-১, মুস্তাফিজ ৪-১-৭-৩, রিশাদ ৩-০-১৫-০, সাকিব ২.২-০-৯-০, মাহমুদউল্লাহ ২০-০-১৫-০)
ম্যাচের সেরা: তানজিম হাসান (বাংলাদেশ)।