টি ২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিতভাবে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর ভারতের কাছে প্রস্তুতি ম্যাচ হারায় শান্ত বাহিনীকে ধুয়ে দিয়েছিলেন ক্রিকেটভক্তরা। তবে সবকিছু পিছনে ফেলে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টিম টাইগার্স। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। তবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। দ্বিতীয় ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানে হেরে গেল টাইগাররা। অপরদিকে টানা তিন ম্যাচে জয় পেল প্রোটিয়ারা।
সোমবার আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে ১১৪ রানের সহজ লক্ষ্য দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তুলতে পারে টাইগাররা। এতে ৪ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ৯ বলে ৯ রান করে দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন দাসও। ১৩ বলে ৯ রান করেন তিনি। চার নম্বরে ব্যাট করতে এসে ব্যর্থ হন সাকিবও। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরেন তিনি। ২৩ বলে ১৪ রান করে তাকে সঙ্গ দেন শান্ত। চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। এরপর টাইগার শিবিরের হাল ধরেন তাওহীদ হৃদয় এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনের ব্যাটে ভর করে জয়ের পথে হাঁটতে থাকে বাংলাদেশ। ১৮তম ওভারে প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন হৃদয়। ৩৪ বলে ৩৭ রান করেন তিনি।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১ রান। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৭ বলে ২০ রান করে আউট হলে ৪ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তুলতে পারে টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন কেশব মাহরাজ। কাগিসো রাবাদা এবং এনরিখ নরকিয়া দুটি করে উইকেট। এ ছাড়াও এক উইকেট নেন ব্যার্টম্যান।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। দলীয় ২৩ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা। ইনিংসের প্রথম ওভারে রেজা হেনড্রিক্সকে সাজঘরে ফেরান তানজিম সাকিব। এক ওভার পরে ওপেনারকে ওপেনার কুইনটন ডি কককে বোল্ড করেন এই তরুণ পেসার। প্রোটিয়াদের পরের আঘাতটা দেন তাসকিন আহমেদ। ৮ বলে ৪ রান করা মারক্রামের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন এই টাইগার পেসার। নিজের তৃতীয় ওভারে ক্রিস্টান স্টাবসকে আউটকে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং বিপর্যয়ে ফেলেন তানজিম সাকিব। ২৩ রানে ৪ রান উইকেট হারায় তারা। এরপর দলের হাল ধরেন ডেভিড মিলার এবং হেইনরিচ ক্লাসেন। দুজনের ব্যাটে ভর করে শুরু ধাক্কা সামলে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। পিচে থিতু হয়েই ছড়ি ঘোরাতে থাকেন ক্লাসেন। ১৮তম ওভারে এই ডান হাতি ব্যাটারকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান তাসকিন। ৪৪ বলে ৪৬ রান করেন ক্লাসেন। পরের ওভারে মিলারকে ফেরান লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ৩৮ বলে ২৮ রান করে এই বাঁহাতি ব্যাটার। ২০তম ওভারে মাত্র৪ রান দেন মোস্তাফিজুর রহমান। এতে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন তানজিম হাসান সাকিব। তাসকিন আহমেদ দুটি এবং রিশাদ হোসেন একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১১৩/৬ (ডি কক ১৮, হেনড্রিকস ০, মারক্রাম ৪, স্টাবস ০, ক্লসেন ৪৬, মিলার ২৯, ইয়ানসেন ৫*, মহারাজ ৪*; তানজিম ৪-০-১৮-৩, তাসকিন ৪-০-১৯-২, মোস্তাফিজুর ৪-০-১৮-০, রিশাদ ৪-০-৩২-১, সাকিব ১-০-৬-০, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-১৭-০)
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১০৯/৭ (তানজিদ ৯, শান্ত ১৪, লিটন ৯, সাকিব ৩, হৃদয় ৩৭, মাহমুদউল্লাহ ২০, জাকের ৮, রিশাদ ০*, তাসকিন ১*; ইয়ানসেন ৪-০-১৭-০, রাবাদা ৪-০-১৯-২, বার্টমান ৪-০-২৭-০, মহারাজ ৪-০-২৭-৩, নরকিয়া ৪-০-১৭-২)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচের সেরা: হেইনরিখ ক্লাসেন