বিশ্বকাপের (T20 World Cup) সুপার এইট নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকা ইংল্যান্ড গত রাতে রীতিমতো ‘আহত বাঘ’–এর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে ওমানের ওপর। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা ওমানকে মাত্র ৪৭ রানে গুটিয়ে দেন জফরা আর্চার, মার্ক উড আর আদিল রশিদরা। যে রান তাড়া করতে নেমে জস বাটলার, ফিল সল্টরা সময় নিয়েছেন মাত্র ১৯ বল। মাত্র ৯৯ বলের মধ্যে খেলা শেষ করে ইংল্যান্ড শুধু ৮ উইকেটের জয়ই তুলে নেয়নি, সুপার এইটে ওঠার জন্য রান রেটও বেশ বড় অঙ্কে বাড়িয়ে নিয়েছে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারলে এবং ইংল্যান্ড নামিবিয়াকে হারাতে পারলে বাটলারদের পরের ধাপে ওঠা নিশ্চিত হয়ে যাবে।
অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডে ইংল্যান্ড টস জেতা থেকেই ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওমান ওপেনার প্যাট্রিক আঠাবলেকে ফিরিয়ে ধসের শুরুটা করেন আর্চার। পরে এই ধ্বংসযজ্ঞে যোগ দেন উড ও আদিল রশিদ। ২ উইকেটে ২৪ রান তোলা ওমান পরের আট উইকেট হারায় ২৩ রানের মধ্যে। এর মধ্যে আদিল রশিদ ৪ ওভারে ১১ রানে নেন ৪ উইকেট। উড ও আর্চারের শিকার ১২ রানে ৩টি করে উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দলের তিন বোলার তিন বা তার বেশি উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে অলআউট করল।
ইংল্যান্ডের রেকর্ড বৃষ্টির অবশ্য এখানেই শেষ নয়। রান তাড়ায় বিলাল খানের প্রথম দুই বলেই ছয় হাঁকান সল্ট। বিশ্বকাপ তো বটেই, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই ইনিংসের প্রথম দুই বলে ছয় মারার প্রথম ঘটনা এটি। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইল অব ম্যানের বিপক্ষে স্পেনের আওয়াইজ আহমেদও ইনিংসের প্রথম দুটি বৈধ ডেলিভারিতে ছয় মেরেছিলেন। তবে বোলার জোসেফ বারোজ তাঁর প্রথম বলটি ‘নো’ করেছিলেন।
সল্ট অবশ্য প্রথম দুই বলে ছয় মেরে তৃতীয় বলেই আউট হয়ে যান। পরের ওভারে আউট হন উইল জ্যাকসও। তবে রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার ভাবনায় জিততে সময় নিতে চাননি বাটলার। তৃতীয় ওভারে বিলালের ৬ বল থেকে ৪টি চার আর একটি ছয় মেরে ২২ রান তুলে নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ফাইয়াজ বাটকে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন জনি বেয়ারস্টো। ইংল্যান্ড ২ পয়েন্ট তোলে ৮ উইকেট ও ১০১ বল বাকি রেখে।
বলের দিক থেকে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় জয় এটি। পেছনে পড়েছে ২০১৪ আসরে চট্টগ্রামে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ৯০ বল বাকি রেখে তোলা জয়। ১০ বছর আগের সেই ম্যাচে খেলা হয়েছিল মোট ৯৩ বল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৯ বল খেলা হলো ইংল্যান্ড-ওমান ম্যাচে। ইংল্যান্ডের ১০১ বল বাকি থাকতে জয় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্যদেশের সবচেয়ে বড় জয়, এখানে পেছনেও পড়েছে শ্রীলঙ্কা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচই।
তবে এ সব রেকর্ড নয়, ইংল্যান্ড সবচেয়ে বেশি খুশি রান রেটের জন্য। ‘বি’ গ্রুপে ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা ইংল্যান্ডের নেট রানরেট ৩.০৮১। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট তুলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কটল্যান্ডের ২.১৬৪। অস্ট্রেলিয়া ৬ পয়েন্ট নিয়ে আগেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে। ৪ ম্যাচের সব কটিতে হেরে সবার আগে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করেছে ওমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওমান: ১৩.২ ওভারে ৪৭ (আঠাবলে ৫, প্রজাপতি ৯, ইলিয়াস ৮, মাকসুদ ১, কাইল ১, আইয়ান ১, শোয়াইব ১১, মেহরান ০, ফাইয়াজ ২, কলিমউল্লাহ ৫, বিলাল ০*; টপলি ৩-০-১২-০, আর্চার ৩.২-১-১২-৩, উড ৩-০-১২-৩, রশিদ ৪-০-১১-৪)।
ইংল্যান্ড: ৩.১ ওভারে ৪৮/২ (সল্ট ১২, বাটলার ২৪*, জ্যাকস ৫, বেয়ারস্টো ৮*; বিলাল ২-০-৩৬-১, কলিমউল্লাহ ১-০-১০-১, ফাইয়াজ ০.১-০-৪-০)।
ফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আদিল রশিদ।