আবু আলী, ঢাকা: আগামী ২৭ মার্চ চলবে ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রীবাহী ট্রেন। ২৬ মার্চ ট্রেনটি চালুর ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৭ মার্চ যৌথভাবে এ ঘোষণা দেবেন। সপ্তাহে দুটি দিন ঢাকা ও জলপাইগুড়ি থেকে এ ট্রেন চলাচল করবে। তবে মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ট্রেন চলাচল শুরু হবে না।ট্রেনটির ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ নামে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন।সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ তথ্য জানান। দুপুরে রেল ভবনে এ ঘোষণা দিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট-চিলাহাটি-নিউ জলপাইগুড়ি (সোমবার ও বৃহস্পতিবার ট্রেন নম্বর-৩১৩১) এবং নিউ জলপাইগুড়ি-চিলাহাটি-ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট (রোববার ও বুধবার ট্রেন নম্বর-৩১৩২) চলাচল করবে। এ পথে যাতায়াত দূরত্ব ৫৯৫ কিলোমিটার। এ ট্রেনে ১০টি বগি থাকবে। এসি সিট ১৪৪ টি, এসি চেয়ার ৩১২ টি এবং এসি বার্থ থাকছে ৯৬টি। এসি বার্থ ভ্যাট ও ট্রাভেল ট্যাক্স মিলে ৪ হাজার ৯০৫ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৮০৫ টাকা এবং এসি চেয়ার ২ হাজার ৭০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ট্রেনের ইমিগ্রেশন ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে ও চিলাহাটিতে হবে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, চিলাহাটিতে শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের জন্য রাখা হবে, চাহিদা অনুসারে সেখানে বগি দিয়ে ইমিগ্রেশন করে যাত্রী উঠানো হবে। চিলাহাটি স্টেশন থেকে যে যাত্রী উঠানামা করবে সে স্টেশনে শুধুমাত্র এসি চেয়ার শ্রেণিতে আসন বরাদ্দ থাকবে। চিলাহাটি থেকে এসি চেয়ারে ভাড়া হবে এক হাজার ২৩৫ টাকা।
প্রাথমিকভাবে ভারতীয় রেক (বগি) দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আয়ের আনুপাতিক অংশ পারস্পারিক আলোচনাসাপেক্ষে ঠিক করা হবে।
আগামী বছর ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের কাজ সম্পন্ন করে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে বলে জানান রেলপথ মন্ত্রী।নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আগামী বছরে ডিসেম্বরের মধ্যে মানুষ কক্সবাজারে ট্রেনে করে আসতে পারবে।
গত ১৭ ডিসেম্বর আবারও চালু হয় বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি রুটে ট্রেন চলাচল। ৫০ বছরেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল এ পথে ট্রেন চলাচল। এ রেলপথ উদ্বোধনের দিন চিলাহাটিতে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, এ পথ দিয়ে আপাতত দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। দুই দেশের সম্মতিক্রমে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ আমল থেকেই চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত এ রেলপথে নিয়মিত একাধিক যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করত। ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।