মনিকা হালদার,মুর্শিদাবাদঃ এই নিয়ে দ্বিতীয় ট্রেন ঢুকল রাজ্যে। প্রথমটা এসেছিল রাজস্থান থেকে ডানকুনি।এবার কেরল থেকে পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে ট্রেন পৌঁছাল বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে।প্রায় ১২২০জন পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে ০৬০৯০ নং ট্রেনটি ২২ টি কামরা নিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে পৌঁছয়। ট্রেনটি সরাসরি কেরলের আলুভা ষ্টেশন থেকে বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে এসে পৌঁছয়।
ট্রেনটি ষ্টেশনে আসার বহু আগে থেকেই বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পরার মত। স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় দড়ি ও গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। সেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয় সাধারণ মানুষের। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে দুটি পৃথক কাউন্টার খোলা হয় স্টেশনের মধ্যে।
ট্রেন থেকে যাত্রীরা নামতেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। প্রাথমিক ভাবে থার্মাল স্ক্রিনিং করার পর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়ার পাশাপাশি ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হলে খাবার বিতরণ করা হয় তাদের মধ্যে। তারপর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ট্রেনটি প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরি করে আসলেও নিজের জায়গায় ফিরতে পেরে খুব খুশি শ্রমিকেরা। ডোমকলের বাসিন্দা শেখ রফিকুল বলেন, ‘এতদিন ওখানে খুব কষ্টে দিন কাটছিল।রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলাম।পরিবার নিয়েই আমরা থাকতাম।কিন্তু লকডাউন হওয়ার ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জমানো টাকা দিয়ে কিছুদিন চললেও বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলাম না।এমনকি বাচ্চার দুধ,ওষুধ কিনতে পারছিলাম না ওখানে আটকে পরাতে।
তবে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর উদ্যোগে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সাহায্যে আমরা আজ নিজেদের এলাকায় ফিরতে পেরেছি।তাঁদের প্রতি আমি কৃতঞ্জ।’ স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা, মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি মুকেশ সহ বিভিন্ন আধিকারিকরা। সমস্ত রাজনৈতিক দল থেকে এদিন শ্রমিকদের স্বাগত জানানো হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রাজিব হোসেন ফুল দিয়ে স্বাগত জানায় শ্রমিকদের।তিনি বলেন, ‘ ট্রেন থেকে নামার সাথেসাথে স্টেশনে সব শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। যাদের সন্দেহ হয়েছে তাদের সোয়াব টেস্ট করার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে।প্রত্যেক শ্রমিকের বাড়ির সঠিক ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর রেখে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের মাধ্যমে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এবং জেলার বাইরেও শ্রমিকদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৬৫ টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। স্টেশনের বাইরে নিজের উদ্যোগে শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাবারের প্যাকেট। সেই প্যাকেট হাতে বাসে উঠে শ্রমিকরা নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।’