শুক্রবার কলকাতার বুকে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটল, নাম তেজস জনকল্যান পার্টি (TJP)। যাদবপুর সংলগ্ন বিজয়গড়ের সেন্ট্রাল রোডের দলীয় অফিস থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই নতুন দলের আত্মপ্রকাশের কথা জানান দলের রাজ্য সভানেত্রী রুবি গুপ্তা। তাদের প্রতীক চিহ্ন ‘এক থালা ভাত’ (অন্ন)।
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের সভানেত্রী জানান, তাদের লক্ষ্য প্রতিটি মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া। রাজ্যের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ, বেকারত্ব সমস্যা সমাধান এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি করাই দলের মূল লক্ষ্য। উল্লেখ্য, এই রুবি গুপ্তা অতীতে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এবার তিনি নতুন দল গঠনের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, “সাধারণ মানুষ নতুন রাজনৈতিক বিকল্প চেয়েছিলেন। তাই ১৬ আনা বাঙালিয়ানা নিয়ে আমরা তেজস জনকল্যাণ পার্টি গড়লাম। রাজ্যের মানুষ আমাদের দারুণ সাড়া দিচ্ছেন। আগামী দিনে টিজেপি-ই হবে বাংলার নতুন বিকল্প। রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকেই আমাদের দলে যোগ দিতে মানুষজন যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন।
তেজস জনকল্যান পার্টির (TJP) সভানেত্রী রুবি গুপ্তা রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে একটি দলীয় লিফলেট ছাপিয়েছেন যেখানে বলা হয়েছে, ‘আমি যাদবপুর থেকে বলছি, আমাদের এই দলের নীতি আপনার আওয়াজ, আপনার সিদ্ধান্ত। সব পার্টিকেই তো সমর্থন করলেন, কিন্তু শেষমেশ ফ্রাঙ্কেনস্টাইন আপনাকেই গিলে খেল!”
”ঘর, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা, কর্মসংস্থা/চাকরি, মানুষের খাবার উপযোগী রেশন-খাদ্য, পরিশুদ্ধ পানীয় জল, সহজ উপায় ব্যবসায়িক-ঋণ, স্বল্প বিলের বিদ্যুৎ, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও বিকল্প বিদ্যুৎ কোম্পানি, যাতে মাসের শেষে বিলটা কম হয় সেই টাকাটা সংসারে বাঁচে সবই ডাহা Fail! দিন-কে-দিন আপনি ও আপনার সংসার দুটোই শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই বলছি একবার আমাদের সমর্থন করে দেখুন। আমরা সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের।
আমি যাদবপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। যা প্রতিশ্রুতি দেব তা যদি না পূরণ করতে পারি, এক সেকেন্ডে সমর্থন তুলে নেবেন।কথা দিলাম। একটা প্রশ্ন করব না। কিন্তু একটা সুযোগ দিয়ে দেখুন বদলাতে পারি কিনা। কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে আদায় করে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা আর সুরক্ষা আপনাদের ফিরিয়ে দিতে পারি কিনা। আপনাদের ঘরের সকল শিক্ষিত বেকার যুবক – যুবতীদের আহ্বান করছি, মায়েদের বলছি- দলে দলে এসে যোগ দিন। নিজেরা নেতা নেত্রী হন। নিজেদের মধ্যে থেকে দলের নেতা – নেত্রী তৈরী করুন। যাতে আপনার এলাকার কষ্ট, দুর্দশা আপনি নিবারণ করতে পারেন।এটাই আমাদের পার্টির উদ্দেশ্য সাধারণের মধ্যে থেকে নেতা তৈরী করা। আপনাদের সিদ্ধান্তই হবে পার্টির সিদ্ধান্ত। আপনাদের সিদ্ধান্তের ওপরে কোনো কথা নেই।
রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে রুবি গুপ্তা বলেন, আমি বাঙালি, আপনাদের ঘরের মেয়ে। কথা দিচ্ছি এক পয়সাও ঠকবেন না। তাই দলে দলে যোগদান করুন, তেজস জনকল্যান পার্টিকে(TEJAS JANKALYAN PARTY) সাপোর্ট করুন। যে কোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যাবে এই নম্বরে 9163989188। দলীয় সদর দপ্তরের ঠিকানা সেন্ট্রাল রোড, যাদবপুর, কলকাতা-৭০০০৩২।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তেজস জনকল্যাণ ভোটে লড়বেন কিনা বা সব কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে সামর্থ হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে রুবি গুপ্তা বলেন, “দেখুন আমাদের কোন রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের কুৎসা করা নয়, ভোট ভাগ করা নয়, আমাদের উদ্দেশ্য একেবারে প্রান্তিক আদিবাসী খেটে খাওয়া মানুষজন থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত মানুষদের এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা।” আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তারা রাজ্যের সব কেন্দ্রে প্রার্থী দেবেন বলেও দাবি করেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আগামী দিন তারা নির্বাচন কমিশনের দরবার করে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার সময় গণনা কেন্দ্রে যে বিভিন্ন ধরনের কারচুপি হয় বলে তারা মনে করেন তা বন্ধ করার জোরালো দাবি তুলবেন। ভিন রাজ্য থেকে গণনা কেন্দ্রে গণনা কর্মী নিয়োগ করারও দাবি তুলবেন তাঁরা।যে কোনো জন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে নতুন রাজনৈতিক দল। এদিন এই দলের সঙ্গে যুক্ত হন আদিবাসী একতা মঞ্চের নেতা-নেত্রীরা। এখন দেখার, বাংলার রাজনীতিতে এই নতুন দল তেজস জনকল্যাণ পার্টি কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।