নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম : করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউন এর জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে জঙ্গলমহল তথা ঝাড়গ্রামের পর্যটন শিল্প । পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে মঙ্গলবার পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ বার্তা দিলেন ঝাড়গ্রামের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা ।
শাল, মহুয়া , পাহাড় , জঙ্গলের টানে প্রতিবছরেই পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে ঝাড়গ্রামে । কিন্তু বিগত ছয় মাস ধরে পর্যটকের দেখা নেই । ফলে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । এদিন ট্রাভেল এজেন্টস এসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল এর উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শাখার পক্ষ থেকে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে পর্যটকদের ভ্রমণ বার্তা দিলেন এখানকার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ব্যবসায়ীরা ।
ট্যুর এজেন্ট, হোটেল মালিক , গাড়ির চালক ও মালিক, ট্যুর গাইড এবং গ্রামীণ হোম স্টে এর মালিক এবং কর্মচারীরা সকলেই উপস্থিত হয়ে ঝাড়গ্রাম শহরে প্রবেশের রাস্তায় কলাবনির জঙ্গলে পর্যটকদের আহ্বান জানানোর জন্য একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেন । এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পর্যটকদের ঝাড়গ্রামে আসার বার্তা দেয়ার পাশাপাশি তাদের আশ্বস্ত করতে চান করোনার সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের সমস্ত পরিষেবা প্রদান করা হবে । পর্যটকদের জন্য থার্মাল স্ক্রীনিং এর ব্যবস্থা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিষেবা প্রদান এবং গাড়ি থেকে শুরু করে থাকার জায়গা সবকিছুই নিয়মমাফিক সেনিটাইজেশন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।
গত জুন মাস থেকে অল্প অল্প সংখ্যক পর্যটক ঝাড়গ্রামে আসছেন এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ঝাড়গ্রামে আসার জন্য পর্যটকদের জন্য চালু রয়েছে অব সিজিন ছাড় । জানা যায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই অফ সিজিন ছাড় । ইতিমধ্যে পুজোর বুকিং শুরু হয়ে গেছে বলেও জানা যায় । পর্যটন শিল্পের কর্মকর্তাদের কোথায় ট্রেন চালু না হওয়ার কারণে বহু পর্যটক আসতে পারছেনা। যারা আসছেন তারা বেশিরভাগই নিজের গাড়িতে বেড়াতে আসছেন। ট্রেন চালু হলে পর্যটকদের জন্য গাড়িতে বিশেষ ছাড় দেয়া হবে বলেও জানান তাঁরা।
ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজমের কর্ণাধার সুমিত দত্ত বলেন, ট্রাভেল এজেন্টস এসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল এর উদ্যোগে এদিন ঝাড়গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ বার্তা নামে একটি কর্মসূচি । এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা পর্যটকদের ঝাড়গ্রামে আসার আহ্বান এর পাশাপাশি তাঁদের আশ্বস্ত করতে চাই করোনার সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে পর্যটকদের পরিষেবা প্রদান করা হবে ।
শিবাশীষ চ্যাটার্জী নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, পর্যটকদের জন্য হোটেলের প্রতিটি রুম কে সেনিটাইজেশন এর কাজ ইতিমধ্যেই করা হয়ে গেছে এবং পর্যটক এলে তা প্রতিদিন সেনিটাইজেশন করা হবে । এছাড়াও তাদের হোটেলের সমস্ত পরিষেবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই প্রদান করার চিন্তা ধারা রয়েছে ।
সৌমেন গোস্বামী, মলয় ঘোষ গাড়ী ব্যবসায়ীরা বলেন, পর্যটকদের জন্য গাড়ি প্রতিদিন সেনিটাইজেশন করা হবে এবং যতটা সম্ভব করোনার যে স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে তা মেনে চলা হবে ।
গ্রামীণ হোম স্টে এর কর্ণধার শুভাশীষ দেব সিংহ বলেন, পর্যটকদের জন্য থাকার ঘরটিতে পর্যটকরা যতদিন থাকবে নিয়মিত সেনিটাইজেশন করা হবে । এছাড়াও তাঁদের সমস্ত পরিষেবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রদান করা হবে ।
রাজ্যের মধ্যে ঝাড়গ্রামে এখনো পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে কম রয়েছে মাত্র ২৬২ জন । ফলস্বরূপ রাজ্যবাসীর কাছে ঝাড়গ্রাম বেড়াতে আসার একটা আগ্রহ রয়েছে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র গুলির তুলনায় । পূজার বুকিং এখন থেকে শুরু হওয়া জন্য পর্যটন ব্যবসায়ীরা একটি আশার আলো দেখছেন । ঝাড়গ্রামে পুজোর সময় অন্যান্য জায়গার তুলনায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসবে ।