প্রনব বিশ্বাস ও পল্লব হাজরা, বরাহনগর: চলতি বছরের শুরু অর্থাৎ মার্চ -এপ্রিল মাস জুড়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারে ‘খেলা হবে’ স্লোগান হয়ে উঠেছিল ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান হাতিয়ার। নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে বাম পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ভেঙে গিয়েছিল তাঁর পা। এরপর ব্যান্ডেজ করা ভাঙ্গা পা নিয়েই তাকে নির্বাচনী প্রচারে দেখা যায় এবং বলতে শোনা গিয়েছিল ‘ভাঙ্গা পায়েই খেলা হবে’। বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস। আর ক্ষমতায় এসেই প্রতিবছর ১৬ ই আগস্ট রাজ্যে ‘খেলা হবে দিবস’ পালনের ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো ১৬ ই আগস্ট রাজ্যজুড়ে এই দিনটি পালন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শহর থেকে গ্রাম গঞ্জের প্রতিটি জায়গাতেই ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছে দলের সাংসদ বিধায়ক নেতা- কর্মীরা।
পিছিয়ে নেই উত্তর শহরতলী। বরাহনগর বিধানসভায় বিধায়ক তাপস রায় এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো দিবারাত্রি ইন্টার ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্ট। এদিন এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন, দমদম লোকসভার সাংসদ অধ্যাপক সৌগত রায়, উপস্থিত ছিলেন বরাহনগর বিধানসভার বিধায়ক তাপস রায়, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক তথা প্রাক্তন ফুটবলার খেলোয়াড় বিদেশ বসু সহ বরাহনগর পুরসভার মুখ্য প্রশাসক অপর্ণা মৌলিক,বরাহনগর পুরসভার কো অর্ডিনেটার অঞ্জন পাল,দিলীপ নারায়ণ বসু সহ স্থানীয় বিশিষ্ট খেলোয়াড়রা এবং বরাহনগর অঞ্চলের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টজনেরা।
এই অনুষ্ঠানে সন্মানিত করা হয় বিভিন্ন খেলার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের। এদিন বিধায়ক তাপস রায় সহ কো অর্ডিনেটারাও এই খেলায় সামিল হয়েছিলেন।বিধায়ক জানান, মোট আঠারোটি দল আজ এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে।খেলার সাথে বরাহনগরের সাতানব্বইটি ক্লাবে ফুটবল বিতরণ করা হয়।
ফাইনাল খেলাটি ‘বরানগর নেতাজী কোলনী লো ল্যান্ড দুর্গোৎসব কমিটি’ সাথে ‘রবীন্দ্রনগর ইউথ অর্গানাইজেশন’ এর। ফাইনালে প্রথম গোল করে ‘ বরানগর নেতাজী কোলনী লো ল্যান্ড দুর্গোৎসব কমিটি’ । ঠিক তার কিছু সময়ের মধ্যেই গোল শোধ করে খেলার সমতা ফেরায় ‘রবীন্দ্রনগর ইউথ অর্গানাইজেশন’। অবশেষে এদিন টান টান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে খেলার অন্তিম সময়ে গোল করে জয় ছিনিয়ে নেয় ‘বরানগর নেতাজী কোলনী লো ল্যান্ড দুর্গোৎসব কমিটি’। এদিনের অনুষ্ঠানে ফুটবল প্রেমী মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মতো।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে এই দিনে কলকাতায় একটি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছিলেন ১৬ জন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি খেলাধুলা কে তুলে ধরাটাই এই ‘খেলা হবে দিবস’ এর উদ্দেশ্য। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয় জয়ের পর প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরাতেও ‘খেলা হবে দিবস’ পালন করেছে তৃণমূল।