প্রণব বিশ্বাস: ঘরের মেয়ের ঘরে ফেরা। ‘ ভবানীপুর’ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার দুপুর ২ টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর সার্ভে বিল্ডিং এ গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন মমতা। এসময় তার সাথে ছিলেন ওই কেন্দ্রে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট বৈস্বানর চট্টোপাধ্যায়, তার প্রস্তাবক প্রযোজক তথা অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের স্বামী নিশপাল রানা, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম-এর স্ত্রী ইসমত হাকিম প্রমুখ।
মমতার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আলিপুর সার্ভে বিল্ডিং চত্বর পড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল।
এদিকে ভবানীপুর কেন্দ্রে মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। অন্যদিকে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাস।
আগামী ৩০ শে সেপ্টেম্বর ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচন। ওই একই দিনে মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও সাধারন নির্বাচন নেয়া হবে। ওই দুটি কেন্দ্রেও বিজেপি তাদের প্রার্থী প্রকাশ করেছে। সামশেরগঞ্জ কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী মিলন ঘোষ এবং জঙ্গিপুরে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন সুজিত দাস। আর জঙ্গিপুর কেন্দ্রে তৃনমূলের প্রার্থী জাকির হোসেন এবং সামসেরগঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থী আমিরুল ইসলাম। আগামী ৩ অক্টোবর তিনটি কেন্দ্রেই ভোট গণনা।
সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে নিজের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে কেন্দ্রে দাঁড়ান মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে তিনি পরাজিত হন। যদিও ৫ মে তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সেক্ষেত্রে আগামী ৬ মাসের মধ্যে তাকে যে কোন একটি বিধানসভা কেন্দ্রে জিতে আসা জরুরি ছিল।
অন্যদিকে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন তৃণমূলের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তিনি হারান বিজেপি প্রার্থী অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষকে। যদিও মমতার পরজয়ের পর তার উপ নির্বাচনে দাঁড়ানোর পথ পরিস্কার করতেই গত মে মাসে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন শোভনদেব। ফলে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন জরুরি হয়ে পড়ে।
এর আগে ২০১১ সালে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। সেসময় লোকসভার সাংসদ ছিলেন মমতা। পরে ওই বছরেই বিধানসভার উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। এরপর ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ওই ভবানীপুর কেন্দ্র থেকেই জয়লাভ করেছিলেন মমতা।
অন্যদিকে বিধানসভার নির্বাচনের আগে সমসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ার কারণে ওই দুটি কেন্দ্রে সেসময় ভোটদান স্থগিত হয়ে যায়। ফলে ওই দুটি কেন্দ্রেও এবার নির্বাচন হচ্ছে।
নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ভবানীপুর থেকে ইতিমধ্যেই প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। গত বুধবারই চেতলায় একটি দলীয় কর্মীসভার মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।