নিজস্ব প্রতিনিধি,কোচবিহারঃ অবৈধ ভাবে সীমান্ত টপকে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে আটক বাংলাদেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক এবং বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কোচবিহার আদালত। তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড শেষে আজ ভার্চুয়ালি কোচবিহার আদালতে তোলা হয় সোহেল রানাকে।
শনিবার বিএসএফ’এর তরফেএক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর)পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত সংলগ্নন এলাকা থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় এক বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করে ১৪৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। বিএসএফের ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাহিনীর উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) রবি গান্ধী। চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তে তাকে উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয় বিএসএফ’ এর। এর পরেই তাকে আটক করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিকভাবে তার নাাম জানা যায় শেখ সোহেল রানা, ৪৬ বছর বয়সী এই ব্যাক্তি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া জেলার গিমাডাঙা গ্রামের বাসিন্দা।”
তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৪ টি ব্যাংক ডেবিট কার্ড, ২০ মার্কিন ডলার, ১৫ ইউরো, বাংলাদেশি মোবাইল সিম সহ ২ টি দামি মোবাইল ফোন এবং বেশ কিছু ওষুধ।
জেরায় আটক সোহেল রানা জানায়, গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে বাসে করে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামে পৌঁছয়। ৩ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ অবৈধভাবে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করেন। আর সীমান্ত অতিক্রম করতে বাবু নামে এক বাংলাদেশি দালালকে ১০ হাজার টাকাও দেয় সোহেল। জানা গেছে ২০০৩ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেয় সোহেল রানা।
শুক্রবার তাকে আটক করার পরই তার পরিচয় নিশ্চিত হতে বিএসএফের তরফে যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সাথে। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে আরোও তথ্য পেতে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়। এর পরেই বেরিয়ে আসে সোহেল রানার আর্থিক কেলেঙ্কারির পর গা ঢাকা দেওয়া চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আটক সোহেল রানা স্বীকার করেছে অবৈধভাবে ভারত সীমান্ত পার করে নেপালের কাঠমান্ডু যেতে চেয়েছিল। পরে সেখান থেকে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তার।
আটক সোহেল রানাকে শুক্রবার রাতেই বিএসএফের তরফে তুলে দেওয়া হয় স্থানীয় মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে। সোহেলের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত সব জিনিস মেখলিগঞ্জ পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
অন্যদিকে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৌঁছেছেন বিএসএফের জলপাইগুড়ি সেক্টরের ডিআইজি সঞ্জয় পন্থ সহ পদস্থ কর্তারা।