নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতার সব রাস্তায় আর চলবে না ট্রাম। যেখানে বেশি গতিতে গাড়ি চলে, সেখানে ট্রাম চললে গাড়ির গতি মন্থর হয়ে যাবে, তাই রাজ্য সরকার আর সেখানে ট্রাম চালাতে চায় না। পরিবর্তে সেখান থেকে ট্রাম তুলে নয়ে বিকল্প হিসাবে ওই জায়গাগুলিতে ‘ইলেকট্রিক ট্রলি বাস’ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে যেখানে সম্ভব, সেখানে হেরিটেজ হিসাবে ট্রাম চালানো হবে। এই কথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রী বলেন ‘এমন এমন জায়গায় যেখানে ট্রামগুলো চলছে… আমাদের লক্ষ্য যানজট মুক্ত জায়গা দিয়ে ট্রাম নিয়ে যাওয়া। যেখানে যানজটের সমস্যা আছে- যেমন চিৎপুুর এলাকা, এখানে যদি ট্রাম পরিষেবা দেওয়া হয়, তবে সারাদিন এলাকায় জ্যাম হয়ে থাকবে। তাছাড়া কলকাতায় যেহেতু গাড়ির সংখ্যা আগে থেকে অনেক বেড়ে গিয়েছে, এখানে ট্রাম চালালে যানজট হবেই।’
এসময় মন্ত্রী বলেন ‘কিছু কিন্তু জায়গায় হেরিটেজ হিসাবে ট্রামকে রাখা হবে, যেখানে যানজট হবে না- যেমন খিদিরপুর থেকে ধর্মতলা বা যেখানে আমাদের সড়কপথ চওড়া আছে, একপাশ দিয়ে ট্রাম চললেও কোন যানজটের সৃষ্টি হবে না। কেবলমাত্র সেখানেই ট্রাম রাখা হবে। কিন্তু যেখানে রাস্তার মাঝখান দিয়ে ট্রাম যাতায়াত করে বা ট্রাফিক রয়েছে- এমন জায়গাগুলিতে ট্রাম পরিষেবা দেওয়া খুবই সমস্যার। এর বিকল্প হিসাবে ওই সড়ক পথ দিয়ে ‘ইলেকট্রিক ট্রলি বাস’ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
সেক্ষেত্রে ওভারহেড ইলেকট্রিকের মাধ্যমে যেভাবে ট্রাম চলাচল করে ঠিক সেভাবেই চলবে এই ইলেকট্রিক ট্রলি বাস। আর ট্রামলাইন ধরেই চলবে এই ট্রলিবাস। যদিও এর একটা সুবিধা রযেছে। ট্রলিবাস লাইন ছাড়াও চলাচল করতে পারবে। বিশেষ করে যখন ক্রসিংয়ে এই ট্রলিবাস আসবে, তখন তারা তাদের ট্রাক ছেড়ে যাতায়াতের জন্য ইলেকট্রিক লাইন ছেড়ে ব্যাটারির সহায়তায় সাধারণ রাস্তায়ও চলতে পারবে। আর যখন ইলেকট্রিক লাইনে চলবে তখন এই আধুনিক বাস নিজেই ব্যাটারি চার্জ করতে পারবে।’
ফিরহাদ হাকিম জানান ‘অর্ডার দেওয়া হয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যে একটি ট্রলিবাস আসলেই পরীক্ষামূলক ভাবে তা চালানো হবে।’
সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বা আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোর মতো শহরগুলির পাশাপাশি আগামীদিনে কলকাতার রাজপথেও ‘ইলেকট্রিক ট্রলি বাস’এর দেখা মিলতে পারে। উল্লেখ্য একটা সময় কলকাতার গর্ব বলে পরিচিত এই ‘ট্রাম’এর এক একটি ডিপো থেকে প্রতি মাসেই কয়েক লাখ রুপি সরকারের কোষাগারে ঢুকতো। কিন্তু দিন যত এগোচ্ছে আয়ের পরিমাণ ততই কমছে। তারওপর নানা কারণে কলকাতার বিভিন্ন রুটে এই ট্রাম চলাচল প্রায় বন্ধ। ফলে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে রাজ্যের পরিবহন দফতর। আর তা থেকেই এই ইলেকট্রিক ট্রলি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত।