মা কালীর (Kali Puja) নাম নিয়ে এগিয়ে গেলেই নাকি রাস্তার সমস্ত বাধা অতিক্রম করা যায়। এরকমই বাঙালিদের মনে বিশ্বাস রয়েছে। বাঙালি জাতির সৃষ্টির সময় থেকেই রয়েছে মা কালীর (Kali Puja) প্রতি মানুষের বিশ্বাস ও ভরসা। যেন মা কালী (Kali Puja) বাঙালিদের কণ্ঠস্বর, পরিসর রক্ষা করেন।
মধ্যযুগীয় শাসন থেকে ডাক শব্দের বিশেষ প্রচলন হয়েছে। সরকারি ফরমান শুধু ডাকের মাধ্যমে যেত না। ডাকের মাধ্যমে যেত রাজস্ব। এইটা লুট করে নেওয়াকে ডাকা ডালনা বলা হত হিন্দুস্থানী ভাষাতে। তারপর শুধু ডাকা। ডাকের ওপর হামলা করা ছিল ডাকা।এই ডাকা থেকে ডাকাবুকো এসেছে, অর্থাৎ ডাক লুন্ঠন করার মত সাহস যার বুকে আছে, এ শব্দটা সর্বদাই প্রশংসাবাচক।ডাকা থেকে হিন্দি ডাকাইত থেকে বাংলায় ডাকাত। ইংরেজি ভাষাতেও dacoit শব্দটা ঢুকে গেছে।
বাঙালি চার সহস্র বছর ধরে মাতৃকা উপাসক জাতি। আর মধ্যযুগ ছিল একটি বধ্যভূমি। সেই সময় বাঁচার অধিকার থেকেই ডাকাতির আশ্রয় নিতে হতো। সেই সময় থেকেই ডাকাতরা কালী পুজো করতে। শক্তির আরাধনা করতেই ডাকাতরা মা কালীর পুজো করতো।
কালীর উগ্র ও ভয়ংকর রূপ সৃষ্টির পেছনে আছে পৌরাণিক কারণ। ভারতে কালীপুজোর উত্পত্তি বিকাশ এবং প্রচলন প্রথা সম্পর্কে নানান তথ্য চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে। আমরা সাধারণভাবে মা কালীর যে রূপ দেখি সেখান তাঁর চার হাত রয়েছে। খড়গ, অন্যটিতে অসুর মুণ্ড অন্য হাতগুলিতে তিনি বর এবং অভয় প্রদান করেন। গলায় নরমুণ্ডের মালা, প্রতিকৃতি ঘন কালো বর্ণের এবং রক্তবর্ণ জিভ মুখ থেকে বাইরের দিকে বেরিয়ে আছে । এছাড়াও তিনি এলোকেশি। মা কালীকে দেখা যায় শিবের বুকের উপর পা দিয়ে জিভ বার করে দাঁড়িয়ে আছেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কালী পূজাকে জনপ্রিয় করে তোলেন এবং এইভাবে মা কালীর প্রতিমা পূজার প্রচলন শুরু। উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার বিভিন্ন ধনী জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কালীপুজোর ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়।