এই মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা (7th Pay Commission) ২ শতাংশ বাড়ানোর সুখবর আসতে চলেছে। দোলের আগেই ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা আসতে পারে, এমনটাই জানা যাচ্ছে সরকারের সূত্র থেকে। এই বৃদ্ধির ফলে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম সাইকেলে মহার্ঘভাতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি বছর দু’বার কর্মীদের মহার্ঘভাতা বাড়ায়—একবার জানুয়ারি মাসে এবং অন্যবার জুলাই মাসে। সাধারণত জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রথম সাইকেল চলে এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় সাইকেল শুরু হয়। এই প্রথম সাইকেলের মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা চলতি মাসে, অর্থাৎ দোলের আগেই আসতে পারে।
মহার্ঘভাতার ২ শতাংশ বৃদ্ধি
সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় কর্মীদের মহার্ঘভাতার (DA) পরিমাণ আগামী মার্চে ৫৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৫ শতাংশে দাঁড়াবে। এর ফলে, কর্মীদের বেসিক বেতনের ওপর ২ শতাংশ অতিরিক্ত মহার্ঘভাতা যুক্ত হবে। অর্থাৎ, যারা আগে ৫৩ শতাংশ DA পাচ্ছিলেন, তারা এবার থেকে ৫৫ শতাংশ DA পাবেন।
কীভাবে বাড়বে বেতন?
যদি কোন কর্মীর মাসিক বেতন ৩০,০০০ টাকা হয় এবং তার বেসিক পে ১৮,০০০ টাকা, তাহলে তার পূর্বের মহার্ঘভাতা (DA) ছিল ৫৩ শতাংশ অর্থাৎ ৯,৫৪০ টাকা। এবারে ২ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে তার DA হয়ে যাবে ৫৫ শতাংশ বা ৯,৯০০ টাকা। যদি আবারও ৩ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা হয়, তাহলে তার DA বেড়ে দাঁড়াবে ১০,৮০০ টাকায়, যা মাসিক বেতন বাড়াবে।
এতে কর্মীদের হাতে আরও টাকা আসবে, ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান কিছুটা হলেও উন্নত হবে। বিশেষত, যাদের বেসিক পে কম, তাদের জন্য এই বৃদ্ধি বিশেষ সুবিধা প্রদান করবে।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ডিএ বৃদ্ধি
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ৩ শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা বেড়েছিল, ফলে কম বেসিক পে প্রাপ্ত কর্মীদের প্রতি মাসে ৩৬০ টাকা বেশি DA পাওয়া শুরু হয়েছিল। এবার ২ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে সেই কর্মীরা আরও ৩৬০ টাকা বেশি DA পাবেন।
কীভাবে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে?
এই মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি চূড়ান্ত মন্ত্রীসভা বৈঠকে গ্রহণ করা হবে। সরকার পূর্বেই জানিয়ে দিয়েছে, কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সময়মতো নেওয়া হবে। আগামী ১৪ মার্চ দেশে হোলি তথা দোলযাত্রা উদযাপন হবে, এবং দোলের আগে কর্মীরা এই সুখবর পেতে পারেন।
সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব
মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ফলে সরকারি কর্মীদের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আসবে, যা বাজারে খরচ বাড়াবে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি এবং খুচরা বাজারে কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে, দীর্ঘমেয়াদে এই বৃদ্ধি কীভাবে পুরো দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে, তা নির্ভর করবে অন্যান্য অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর।
সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষণ
এই মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ফলে সরকারের খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পাবে, তবে তা কর্মীদের জন্য একটি বিশেষ সুবিধা হয়ে উঠবে। চাকরির বাজারে সরকারি কর্মী শক্তির প্রতি বার্তা হিসেবে এটিকে দেখা যেতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে সরকারের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
বিশেষ করে, সাধারণ মানুষ এই বেতন বৃদ্ধির খবরকে উৎসাহজনক হিসেবে দেখছেন, কারণ এটি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার সুযোগ প্রদান করবে। তবে, এ থেকে দেশের সাধারণ অর্থনৈতিক অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, তা সময়ই বলে দেবে।