সন্দেশখালি (Sandeshkhali) মহিলাদের নিগ্রহের মামলায় পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে কোনও স্বস্তি পেল না। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে। হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত বলেছে, “কোনও ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজ্য সরকার কীভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে? গ্রীষ্মকালীন ছুটির পর আদালত এই মামলার শুনানি করবে।
সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং জমি দখলের অভিযোগের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। বিষয়টি শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বিস্ময় প্রকাশ করে যে রাজ্য সরকার একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্তের বিরোধিতা করছে। গত ১০ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট মহিলাদের নিগ্রহ এবং সন্দেশখালিতে মানুষের জমি দখলের অভিযোগের তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেয়। রাজ্য সরকার তাতে আপত্তি জানিয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাগনানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ তদন্ত সংস্থাকে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলে, যার পরে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এটি সিবিআই-কে একটি পৃথক পোর্টাল এবং ইমেল খোলার নির্দেশ দেয় যাতে সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ভুক্তভোগীরা জমি দখল ও চাঁদাবাজি সম্পর্কিত অভিযোগ দায়ের করতে পারে। আদালত অভিযোগকারীদের পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকেও নির্দেশ দিয়েছিল। সন্দেশখালির বেশ কয়েকজন মহিলা অভিযোগ করেছেন যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) বরখাস্ত নেতা শেখ শাহজাহান এবং তার সহযোগীরা যৌন হয়রানি ও জমি দখল করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের একটি দল সন্দেশখালিতে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েছিল। রেশন কেলেঙ্কারি মামলায় এই তদন্ত হওয়ার কথা ছিল। তদন্তকারী সংস্থার সেই দলটি শাহজাহানের গুন্ডাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে। হামলায় অনেক আধিকারিক আহত হন। এক মাস পর পুরো সত্যিটা সামনে আসে। সন্দেশখালির মহিলারা মুখ খুলতে শুরু করেন। তারা অভিযোগ করেন, যে শাহজাহান এবং তার লোকেরা মহিলাদের যৌন নির্যাতন করত। এছাড়াও শাহজাহান এখানকার বহু মানুষের জমি দখল করেছিলেন। সেই জমিতে মাছের ভেড়ি বানিয়েছিলেন। জনগণকে জমির যথাযথ মূল্য দেওয়া হত না, মজুরিও দেওয়া হত না। টাকা চাইলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার পর শাহজাহান শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।