RSS on BJP: বিজেপিতে পুরনোদের দিন ফুরিয়েছে, নতুন জমানার ‘মনখারাপ’ সর্বত্র, বিপদ বুঝে আসরে আরএসএস

বিজেপিতে এখন এক ‘অদ্ভুত’ প্রবণতা চলছে, যেখানে সংগঠনের পুরনো দিনের নেতারা আর তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারছেন না। রাজনৈতিক অঙ্গনে বদল আসলেই বদলে যায় নেতৃত্বের মুখ, এবং সেই পরিবর্তনের সঙ্গে একাধিক পুরনো নেতা আর কার্যক্রমে ফিরতে চান না। বর্তমানে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে মাঠে নামতে হচ্ছে আরএসএসকে (RSS on BJP)।

বিজেপির পুরনো নেতাদের ‘অদৃশ্য’ হওয়ার প্রবণতা এখন সংগঠনটিতে এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রে যখনই নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়, তখন রাজ্য স্তর থেকে শুরু করে জেলা, মণ্ডল এবং বুথ পর্যন্ত সব জায়গাতেই বদলে যায় দায়িত্ব। এই প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রেই এমনভাবে হয় যে, পুরনো দিনের নেতারা, যারা এক সময় দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, তাদের আর কোনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেওয়া হয় না।

Put Out to Pasture - India Today

 

বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে যেমন অটল বিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং মুরলী মনোহর যোশী আছেন, যাদের অবদান দেশের রাজনীতিতে অনস্বীকার্য, তবে এখন তাঁদের বয়সের কারণে সংগঠনে সক্রিয় হওয়া সম্ভব নয়। প্রথম নরেন্দ্র মোদী সরকারের সময় বেশ কিছু প্রবীণ নেতা সরকারে দায়িত্ব পেয়ে ছিলেন, তবে তার পর থেকে ধীরে ধীরে তাঁরা অবসরে চলে যান, কিংবা তাঁদের ভূমিকা অনেকটাই নীরব হয়ে যায়।

বিজেপির রাজ্যস্তরের পরিস্থিতিও অনেকটাই একই রকম। এক সময়ের শক্তিশালী নেতা যেমন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি অসীম ঘোষ, এখন দলের নীচু স্তরের তরুণ কর্মীরা তাঁর নামও জানেন না। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের সময় থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে, বিজেপির অনেক পুরনো নেতা দলের নেতৃত্ব থেকে অবহেলিত হচ্ছেন, এবং অনেকেই সক্রিয় ভূমিকা নিতেও অনীহা প্রকাশ করছেন।

এর ফলে একদিকে যেমন প্রবীণ নেতাদের মনক্ষুণ্ণ  হচ্ছিল, অন্যদিকে দলেরও সংগঠনের ভিত এক ধরনের সংকটের মধ্যে পড়েছে। তবে এই পরিস্থিতি স্বীকার করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠক। তিনি মনে করেন, রাজনীতিতে যত দীর্ঘদিন কেউ থাকে, ততই তার অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়, যা দলের উপকারে আসতে পারে।

এই পরিস্থিতি এখন সমাধানের চেষ্টা করছে আরএসএস। তারা বিভিন্ন স্তরে সংগঠনের কার্যকলাপ আরও শক্তিশালী করতে কাজ শুরু করেছে, এবং বিভিন্ন অঞ্চলে সমন্বয়ের বৈঠকও শুরু করা হয়েছে। সঙ্ঘের লক্ষ্য, সকল অংশকে একত্রিত করে দলের ভরসা এবং কার্যকারিতা পুনর্স্থাপন করা।

বিজেপির বর্তমান সংকট, যদিও কঠিন, তবুও এক নতুন জমানার সূচনা করছে। সংগঠনকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আরএসএসের এই উদ্যোগ, বিজেপির ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।