কলকাতা: গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। ছাত্রদের দাবি ছিল, ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু করার। সেই বিক্ষোভের পর, একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়ে গেছে। আজ, সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ছাত্রদের সঙ্গে একটি বৈঠক, তবে বৈঠকের আগেই নতুন এক ঘটনার সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে, ওমপ্রকাশ মিশ্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন, তখন একাংশ ছাত্রছাত্রী তাঁকে ঘিরে স্লোগান দিতে শুরু করেন এবং প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান। এই পরিস্থিতিতে ওমপ্রকাশ মিশ্র হাত জোড় করে উপস্থিত ছাত্রদের অনুরোধ করতে থাকেন, “কাইন্ডলি আমাকে যেতে দিন, আমার যাওয়ার প্রয়োজন আছে,” এবং অবশেষে তিনি প্রবেশ করতে সক্ষম হন।
ওমপ্রকাশ মিশ্রের ঘরের বাইরে ছাত্ররা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। পরিস্থিতি এমনভাবে মোড় নেয় যে ক্যাম্পাসের বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়, তবে বৈঠকটি সঠিক সময়ে শুরু না হওয়ায় ছাত্রদের মধ্যে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বেলা ১টা পর্যন্তও বৈঠকের সময়সূচি নিশ্চিত করা যায়নি।
এদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে যে বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য, বিভিন্ন বিভাগের ডিন এবং ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তবে এদিনের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রদের দাবি, যেহেতু এখনও পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে পুনরুদ্ধার করার বিষয়টি কার্যকর হয়নি, তাই তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এই বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে, এবং কলকাতা হাইকোর্টে ব্রাত্য বসু ও ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে মামলাটি চলছে। তার উপর এই নতুন পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতে থাকা এই বিক্ষোভ ও আন্দোলন ছাত্র রাজনীতির নতুন দিক নির্দেশ করছে, এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিস্থিতি এখন আরও তীব্র হতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।