নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘আন্দোলনজীবী’ মন্তব্যের জোরালো সমালোচনায় সরব বিরোধী থেকে কৃষক নেতারা।
সোমবার রাজ্যসভায় মোদীর দাবি ছিল, নতুন এক ধরনের মানুষের দেখা মিলছে, যাঁরা ‘আন্দোলনজীবী’। সেই সূত্রে তাঁদের ‘পরজীবী’ও বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, যেখানেই আন্দোলন, সেখানেই পৌঁছে যান এই ‘গোত্রে’র মানুষ। নিজেদের কিছু করার ক্ষমতা নেই, বেঁচে থাকেন আন্দোলনকে উপজীব্য করে। পাশাপাশি কৃষক আন্দোলন নিয়ে আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটিদের টুইটের প্রেক্ষাপটে এফডিআই-এর ব্যাখ্যা পাল্টে বলেন — ফরেন ডেসট্রাকটিভ ইডিয়োলজি।
‘আন্দোলনজীবী’ মন্তব্যে তাঁদের অসম্মান করা হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। কিষান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলছেন। আমরা সে জন্য প্রস্তুত। তিনি বলছেন, কৃষকদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। কিন্তু কাদের সঙ্গে কথা বলছেন উনি? সেটা পরিষ্কার করেননি।’
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মোদীর বক্তব্যকে ‘অসত্য’ বলে বিঁধেছেন। তাঁর টুইট — আমরা উন্নয়নের স্বার্থে বরাবরই সংস্কার চেয়েছি। কিন্তু কৃষিকে ধ্বংস করে চাষির পেটে লাথি মেরে কোনও স্বার্থান্বেষী কর্পোরেটের সুবিধা করে দেওয়ার পক্ষপাতী আমরা নই। ‘আন্দোলনজীবী’ মন্তব্যে তাঁর দ্বিতীয় টুইট — মানুষ নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জীবন সুরক্ষিত করতে এই আন্দোলন করছেন। তাঁরা পরজীবী নন।
শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল এই আন্দোলনকে কোনও ধর্মের সঙ্গে যুক্ত না-করে কৃষকদের সুবিচার দেওয়ার জন্য মোদীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কংগ্রেসও মনে করে, কৃষকদের সমস্যার সমাধান না করে এবং এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য না করে মোদী আসলে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করলেন।
পাশাপাশি রাজ্যসভায় মোদী পাঞ্জাবের অবদান নিয়ে বক্তব্য রাখার কারণেও বিরক্ত কৃষকরা। তাঁদের বড় অংশের মতে, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে এটা তাঁকে করতেই হতো। সংযুক্ত কিষান মোর্চার তরফে ক্রান্তিকারী কিষান ইউনিয়নের সভাপতি দর্শন পাল বলেন, ‘পাঞ্জাবের অবদানকে স্বীকৃতি জানাতেই হবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। কিন্তু এটা দেশের সমস্ত কৃষকের আন্দোলন। আন্দোলনজীবী বলে প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের যে অসম্মান করেছেন, আমরা তার নিন্দা করছি। ওঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে এ রকম আন্দোলনই দেশকে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত করেছে। আন্দোলনজীবী হয়ে আমরা গর্বিত।’