প্রনব বিশ্বাস,ভাটপাড়া : দিন কয়েক আগে পাট শিল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জুট মিল ও পাট শিল্পর সমস্যা নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে ছিলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এবং বলেছিলেন, দরকারে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই প্রতিবাদ করব। এরপর থেকেই অর্জুনের বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূলে যাওয়ার জল্পনা শুরু হয়। আজ আরও একবার সেই জল্পনাই উস্কে দিতে দেখা গেল ভাটপাড়ায়।
ভাটপাড়ায় নবরূপে নির্মিত এক শিব মন্দিরের উদ্বোধনের আগে কলসযাত্রায় একসাথে অংশ নিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এবং জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। অন্যদিকে গঙ্গার ঘাটে পুজো করতে দেখা গেল ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক তথা অর্জুন পুত্র পবন সিং এবং জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামকে একসাথে।
যদিও জগদ্দলের এই ধর্মীয় মিছিলে হাঁটা নিয়ে দাবি করা হচ্ছে এই যোগাযোগ নেহাতই ঘটনাচক্রে। তবে এই দাবি মানতে নারাজ ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক মহল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বিজেপিতে গুঞ্জন দ্রুত দলত্যাগ করবেন অর্জুন সিং।
কাঁকিনাড়ায় নতুন রূপে উদ্বোধন হচ্ছে ‘শ্রী শ্রী ফক্কড়নাথ শিব মন্দির’। প্রথা অনুযায়ী বুধবার মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে আয়োজিত কলসযাত্রায় একসঙ্গে হাঁটলেন অর্জুন সিং ও সোমনাথ শ্যাম এবং তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গেই গঙ্গার ঘাটে পুজো দেন অর্জুন পুত্র তথা ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিং।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাটশিল্পের দুরাবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে। যেভাবে প্রতিটি বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গোয়েলকে তুলোধনা করছেন তাতে তাঁর তৃণমূল যোগের জল্পনা এড়ানো যায় না। বুধবার ধর্মীয় মিছিলে তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে একসঙ্গে হেঁটে সেই জল্পনা আরও বাড়ালেন অর্জুন সিং।
যদিও বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বক্তব্য, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমরা প্রথম থেকেই জড়িয়ে রয়েছি। এখানে কে আসবেন তা নিয়ে আমার চিন্তা নেই। মহাযজ্ঞে সকলেই শামিল হন। রাম যখন সেতু তৈরি করছিলেন তখন কাঠবিড়ালিও সাহায্য করেছিল। তাই প্রত্যেকেই ধর্মীয় মঞ্চে আসতে পারেন। এখানে কাউকে আটকানো যায় না। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের বক্তব্য, আমার পাশে কে ছিল জানিনা। মন্দির কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে উপস্থিত হয়েছিলাম। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
তবে এর আগে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ব্যারাকপুরে বেশ কয়েবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন অর্জুন। কিন্তু কখনও তৃণমূল ও বিজেপিকে একসঙ্গে দেখা যায়নি। তাই এবার তৃণমূল বিজেপিকে একসঙ্গে দেখে জল্পনা যে আরও বাড়তে শুরু করেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।