নিজস্ব প্রতিনিধি,বাগদা: উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার কোমরখোলা এলাকায় এক বিধবা মহিলার সমৃদ্ধি যোজনার টাকা মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি লনেত্রী ও তার মেয়ের বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগ জানাতেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সোমবার চন্দনা রায় নামে আহত মহিলা তাদের বিরুদ্ধে মারধর করে টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ জানানা। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুশীলা বিশ্বাস ও মেয়ে সুপ্রিয়া বিশ্বাস। তাদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা রুজু করা হয়েছে। বুধবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারপতি তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন ।
উত্তর ২৪ পরগনা বাগদা ব্লকের হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কুমোর খোলা গ্রামের বাসিন্দা চন্দনা রায়। বিধবা চন্দনা দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে কলকাতাতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালায় । বছর খানেক আগে পার্শ্ববর্তী গ্রামের সুশীলা বিশ্বাস নামে এক মহিলা সমৃদ্ধি যোজনার টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন। যোজনার আবেদনপত্র জমা করতে সুশীলা ৩০০ টাকা নেয় তার কাছ থেকে। চন্দনা দেবী জানান, সুশীলা তাকে জানিয়েছিল ২০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। আর সেই টাকা তাকে শোধ করতে হবে না। তবে তার বিনিময়ে সুশীলাকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে। সংসারে অভাব থাকায় তখন সুশীলার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান চন্দনা।
কয়েকদিন আগে ওই প্রকল্পের টাকা চন্দনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকে। সোমবার চন্দনা রায় ও তাঁর ভাই সৌমিত্র শিকদার ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে সুশীলার বাড়িতে যায়। অভিযোগ, তখন সুশীলা ১৫ হাজার টাকা দিতে ১৬ হাজার টাকা দাবি করে। যা নিয়ে তাদের মধ্যে বচসা বাঁধে। অভিযোগ, রাজি না হওয়ার তাঁকে মারধর করেন সুশীলা ও তাঁর ছেলেমেয়ে। চন্দনার আরও দাবি, “মারধর করে তাঁদের কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় সুশীলা।” বাগদা থানায় অভিযোগ দায়ের করে চন্দনা। অভিযোগ পেয়ে মা ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বাগদা পশ্চিম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অঘোর চন্দ্র হালদার বলেন, “সুশীলা বিশ্বাস বিজেপি কর্মী। সমৃদ্ধি যোজনা টাকা নিয়ে তিনি যা করেছেন পুলিশের কাছে তার তদন্তের অনুরোধ করছি। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন করছি।” সুশীলা যে বিজেপি কর্মী তা মেনে নিয়েছেন বাগদা ২ নম্বর মণ্ডল বিজেপি সভাপতি হরষিত চন্দ্র বালা। তিনি বলেন, “সুশীলা মণ্ডল বিজেপির কমিটিতে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে নেই। তিনি ব্যক্তিগতভাবে যদি এই কাজ করে তাহলে তার সাজা হওয়া উচিত।”